মেদিনীপুর লোকাল। পর্ব ১৯। রবিবার। লিখছেন আদিত্য ঢালী

0

রবিবার মানেই আপামর বাঙালির কাছে একটা ছুটির দিন। ছুটির দিনের থেকেও বড় আয়েশের দিন। সারা সপ্তাহের ক্লান্তি বিনাশের দিন। ছোটোদের স্কুল, টিউশন সব কিছুর থেকে মুক্তি। আর বড়দের অফিসের ডিপ্রেসন থেকে। বাড়ির মায়েদের সকাল সকাল উঠে সময়ে রান্না করে দেওয়ার থেকে মুক্তি। রবিবার একটু বেলা অবধি ঘুমাবার দিন। রবিবার একটু বেশিই আয়েশ করে চায়ে চুমুক দেওয়ার দিন। ঘুম থেকেও উঠেও আরও কিছুক্ষণ বিছানায় গড়িয়ে নেওয়ার দিন। বাজারে গিয়ে এক ব্যাগ বাজার করে ফিরে আসার দিন। বেলা বাড়লে পরে পাড়ার রকে, নদীর ধারে বা খেলার মাঠে নিরেট আড্ডা দেওয়ার দিন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে আড্ডাও বাড়তে থাকে। বেলা গড়িয়ে গেলে হুশ ফেরে বাড়ি ফিরতে হবে। বাড়ি ফিরে স্নান সেরে কষা মাংস দিয়ে রসিয়ে ভর পেট ভাত খাওয়ার দিন রবিবার। পেট ভরে খাওয়ার পর ফ্যানের তলায় দু পা ছড়িয়ে দুপুরের ভাত ঘুম দেওয়ার দিন রবিবার।

এরকম একটা আয়েশের পরিবেশে জ্ঞান হওয়ার পর থেকে প্রতিটা রবিবার পার করে এসেছি। ছোটবেলায় রবিবার শুরু হত ঠাকুমার ঘরের চিত্রহারের গান দিয়ে। সারা পাড়ার মধ্যে একটা সাটার দেওয়া বড় সাদাকালো টিভি ছিল ঠাকুমার ঘরে। আমাদের সকলের একমাত্র আনন্দের আস্তানা। দিন যত এগিয়েছে সেই সাদা কালোকে পিছনে ফেলে এগিয়ে এসেছে রঙিন টিভি। অ্যান্টেনার বদলে এসেছে কেবল নেটওয়ার্ক। আমাদের ছোটোবেলার চিত্রহার টিআরপির রেসে হেরে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে তারপর।

রঙিন টিভির দৌরাত্ম্য যত বেড়েছে সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আমাদের খেলার দৌরাত্ম্য। রবিবার মানেই ভোর থেকে উঠে খেলতে যাওয়া। কোনো কোনো দিন উঠতে দেড়ি হয়ে গেলে দাঁত না মেজেও এক দৌড়ে মাঠে পৌছে যাওয়া। ঘরে ঢোকার সময় আবার বাবা কাকাদের মুখোমুখি। বাজারের থলি সাইকেলে নিয়ে যেতে দেখলেই মনে মনে প্রমাদ গুনে ফেলা আজ দুপুরে কষিয়ে মাংস ভাত। মাংসের সাথে মফস্বলি কলোনির বাঙালিদের রবিবাসরীয় সম্পর্ক রিফিউজি হয়ে এদেশে আসার কয়েক দশক পর থেকেই আমার মনে হয়। এখানে মাংস মানে চিকেন। আর চিকেন মানে রবিবার। ছোটবেলায় যখন বেলায় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মাঠঘাট, রকের উদ্দেশ্যে যেতাম তখন প্রতি দুইবাড়ি অন্তর মাংস রান্নার গন্ধ ভেসে আসত। আমার ধারণা এই অভিজ্ঞতা শুধু আমার একার নয়। আমার মত যারা কলোনির ছেলে, আমার মত যাদের পরিবারকে একসময়ে সব খুইয়ে এসে এপারে আবার নতুন করে সব গড়ে তুলতে হয়েছিল, আমার মত যারা আড্ডাবাজ, আমার মত যারা রবিবার পড়াশুনোকে বুড়ো আঙুল দেখাতে দুবার ভাবেনি তাদের সবার এই অভিজ্ঞতা কম বেশি আছে। কোনো গৃহ শিক্ষক যদি বলত রবিবার আসবে তাকে শুরুতেই বারণ করে দেওয়া হত। বাড়িতে আগেই বলা ছিল সারা সপ্তাহ মারধোর খেয়ে খেলাধুলো ত্যাগ করে বইতে মুখ গুঁজে বসে থাকতে রাজি কিন্তু রবিবার কখনই নয়।

একসময় রবিবার বেলা ১২টার সময় শক্তিমান এল। ভোঁ ভোঁ করে ঘুরে ঘুরে সে সবার আগে পৌঁছে যেত। আমাদের কিন্তু তার আগে পৌছানোর তারা ছিল ভিষন। ১২টা বাজার দুমিনিট আগে হাঁফ খেলা ছেড়ে এসে টিভির সামনে বসে পড়তাম। নিজের ঘরে তখনও টিভি আসেনি। কোনোদিন না দেখা হলে সোমবার স্কুলের লাস্ট বেঞ্চে বসত সুমন্তর গল্প দাদুর আসর। গল্প দাদুর আসর থেকেই আমরা না দেখা পর্বের গোটা গল্পটা সবিস্তারে শুনে ফেলতে পারতাম। দিন যত এগোতে লাগল শক্তিমান ঘুরে ঘুরে আসা বন্ধ করে দিল। আমরা সবাই মাধ্যমিকের গন্ডি পেড়িয়ে বাধ্য থেকে অবাধ্য হওয়ার দিকে এগোতে লাগলাম। তখন খেলাই জ্ঞান, খেলাই প্রাণ খেলাই ধর্ম। ঠিক সকাল দশটার মধ্যে উইকেট মাটিতে পোতা হয়ে যেত। কেউ কেউ আবার ওয়ার্ম করা শুরু করে দিত। কিছুক্ষণের মধ্যে খেলা শুরু। কোনো কোনো সপ্তাহে আবারে এ পাড়ার সাথে ও পাড়ার বা এ ক্লাবের সাথে ও ক্লাবের ম্যাচ থাকত। সেই ম্যাচ দেখতে দু-চারজন ভিড়ও জমাত। খেলা হত জমজমাটি। সে যেন ‘তিন গুণা লাগান’ বাজি রেখে ম্যাচ।

কলেজে ওঠার পর রবিবার যে কতটা জায়গা জুড়ে জীবনে আছে সেটা প্রথমবার বুঝতে পারলাম যখন কলেজের নোটিশবোর্ড থেকে প্রথমবার রুটিন টুকতে গেলাম। আগে জানতাম না। ভাবতেও পারিনি কখনও। জানতে পারলে এ কলেজে কখনই নৈব নৈব চ। নোটিশবোর্ডে চোখ দিয়ে বুঝতে পারলাম ভয়ানক ঝড় শুরু হয়েছে মনের মধ্যে। রবিবার ক্লাস হবে এখানে। রবিবার কোনো ছুটি নেই। এ কীভাবে সম্ভব? এখুনিই এর বিচার করতে হবে। এ একেবারে ভুল। রবিবার কোনোদিন ক্লাস হতে পারে না। রবিবার কীভাবে একজন ক্লাস নেবে আর বাকিরা ক্লাস করবে? দু-চারজনকে বললামও তারা আমার কথার বিশেষ পাত্তা দিল না। ম্যানেজমেন্ট থেকে বলা হল এইসব খেলো আদিখ্যেতা থাকলে এই কলেজে পড়ার নাকি কোনো যোগ্যতা নেই। আদিখ্যেতা বিসর্জন দিয়ে আসতে হবে এখানে আসার আগে। আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে আমি কলেজেই বাতিল করে দিতাম। কিন্তু কালের নিয়মে জেনেছি ক্ষমতা অর্জন করা একটি স্টেপ বাই স্টেপ প্রসেস। সেখানে মূল্যবোধ, নস্টালজিয়া এসবের তোয়াক্কা করতে নেই।

সকাল বেলা যখন বাস ধরতে যেতাম তখন খেলার মাঠে ভরপুর লোক। আবার বিকেলে যখন ফিরতাম তখনও মাঠ ভর্তি লোক। আমার যাওয়ার উপায় নেই। যাওয়া আসার পথে বন্ধুরা সব মুচকি হাসত। আমি ঐ হাসির অর্থ বুঝি। হয় মশ করছে নয়ত সহানুভুতি দেখাচ্ছে। স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে যাওয়ার পর একমাত্র রবিবারই ছিল সকলের সাথে দেখা হওয়ার দিন। সবাই ভিন্ন ভিন্ন কলেজে। সপ্তাহে বাকি দিন দেখা হওয়ার সুযোগ নেই। সকলের মধ্যে একমাত্র আমার রবিবার কলেজ। তাই আমার সাথে কারোর দেখা হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের সবার কাছে তখনও ফোন এসে পৌছায়নি। আমরা তখনও ভার্চুয়ালের থেকে অ্যাকচুয়াল আড্ডা দিতে বেশি ভালবাসতাম। মাস দুয়েক যেতেই বুঝলাম এভাবে হবে না। আর যাই হোক রবিবার করে কলেজে যাওয়া যাবে না। যেমন ভাবা তেমন কাজ। রবিবার করে অঘোষিত ছুটি। রবিবার করে না গেলে কী হতে পারে? বড়জোর প্র্যাক্টিক্যাল, ইন্টারনাল এসবে নাম্বার কম দেবে। গ্রেড কম আসবে। কিন্তু আঠরোর তারুণ্য এসবের তোয়াক্কা করেনি। নাম্বার কম আসে আসুক রবিবার করে যাওয়া যাবে না। আমার এই সিদ্ধান্ত যদিও আমায় পরিবর্তীকালে খুবই ভুগিয়েছিল কিন্তু নিজের সিদ্ধান্ত থেকে কখনও সরে আসেনি। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া রবিবার কোনোদিনও কলেজগামী বাসে উঠিনি। নাম্বারের থেকে রবিবার আমার কাছে আগে ছিল। কারণ ততদিনে বুঝে গিয়েছিলাম ক্লাসরুমের ছাড়াও গোটা জগৎটাই লেখাপড়ার পরিমণ্ডল। আর এই পরিমণ্ডলে কোনো সময়ের নিয়মবিধি নেই, কোনো টিচারের হুঙ্কার নেই, স্বজনপোষণ নেই। আছে শুধু জ্ঞানের ভাণ্ডার। যেখান থেকে নিজের ইচ্ছে মত যা খুশি শিখে ফেলা যায় যখন তখন।

কলেজ, দুই ইউনিভার্সিটি, ফ্রিলান্সিং, শিক্ষকতা সব কিছু পার করে যেদিন মেদিনীপুর লোকালে উঠেছিলাম সেদিন সবার আগে দেখেছিলাম বাড়ি থেকে কত দূরে থাকতে হবে। যাতায়তের উপায় কী আছে। আর যাই হোক সবাই কে ছেড়ে এই ভিন গাঁয়ে, শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় সপ্তাহের বাকি দিন চোখ বুজে মুখ বুজে কাটিয়ে দিতে পারলেও রবিবারকে কোনোভাবেই কাটানো যাবে না। সপ্তাহের শুরুর দিন থেকে পাখির চোখ থাকত শনিবারের বারবেলার উপর। কত জলদি সব শেষ করে বাড়ির অভিমুখে রওনা হওয়া যায়। একবার বেড়িয়ে পড়তে পারলেই নিশ্চিন্ত। যত রাতই হোক যেভাবেই হোক বাড়ি পৌঁছে যাওয়া যাবে। আর একবার বাড়ি পৌঁছে গেলেই রাত পার করে অপেক্ষা করবে আয়েশের রবিবার। সকালের আড্ডা, দুপুরের কষা মাংস ভাতের পর ভাতঘুম, বিকেলের টো টো, সন্ধ্যেতে আবার আগামীকাল ফিরে যেতে হবে সেই আফশোষ নিয়ে কেটে গেলে এত বছরের রবিবার।

মাত্র একটি দিন এসেছিল যেদিন এই কোন অনুভূতিই হয়নি। সেদিন আমি বাড়ি ফিরতে পারিনি। গোটা একটা দিন থেকে যেতে হয়েছিল ওখানে। তাও আবার রবিবার। কষ্টের শেষ ছিল না। শনিবার সন্ধ্যে হতেই বন্ধুদের ফোন আসতে শুরু করেছিল কখন ফিরছি জানার জন্য। একটা ফোনও তুলি নি। বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে ছিলাম। একের পর এক ফোন এসে গেছে। ধরিনি। শুধু একটা মেসেজ করে দিয়েছিলাম তারপর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে – ‘আজ আর আসতে পারব না’। বন্ধুরা কান্নার স্মাইলি পাঠিয়েছিল। তার কিছুক্ষণ পর উইকএন্ড পার্টির ছবি। আমি বুঝতে পারছিলাম আমার মনের মধ্যে তীব্র দংশন হচ্ছে। মানুষের মনের যন্ত্রণা থেকে মানুষকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুক্তি দিয়ে এসেছে একমাত্র সুরা। আমার যে বন্ধু একসময় রীতিমত সকলকে সাক্ষী রেখে ঘোষনা করেছিল যে সে কোনোদিনও সুরাপান করবে না আজ সেও কর্পোরেট অফিসের ডিপ্রেসন কাটাতে শনিবার রাতে বোতল থেকে ঢক ঢক করে গিলে নেয় সারা সপ্তাহের ক্লান্তি, অফিসের চাপ, বসের চোখরাঙানি কিংবা না পাওয়া প্রেমের দুঃখ। একবার কষ্ট করে গিলে নিতে পারলেই যেন সব যন্ত্রণার থেকে মুক্তি ক্ষণিকের। আমিও তাই করলাম। বাড়ি যেতে না পারার যন্ত্রণা ভুলতেই সুরাতেই নিমজ্জ হলাম। সেদিন আর কোনো ব্র্যান্ডের বাছ বিচার করিনি। হাতের কাছে যা পেয়েছি তাই গিলে নিয়েছি।  কিছুক্ষণ পর চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে। বাইরের শব্দ কমে গেছে। আমি যেন গভীর থেকে আরও গভীরে নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছি ক্রমাগত। কত গভীরে নিমজ্জিত হয়েছিলাম কতক্ষণ ধরে তা আর আমার মনে নেই। মনে না থাকারই কথা। যন্ত্রণারা ডুবে যায় বলেই চোখের জল নোনতা হয় এই পৃথিবীতে। যদিও বিজ্ঞান বলে চোখের জল আদতে আমাদের শরীরের জল দিয়ে তৈরি হয় আর তার মধ্যে সল্ট আয়ন থেকে বলেই তা নোনতা। কিন্তু যন্ত্রণার সময় বিজ্ঞানের থেকে জীবন দর্শন গুরুত্ব পায় বেশি।

পরদিন সকালে ঘুম ভেঙেছিল অনেক বেলায়। ঘুম ভাঙার পর অনুভব করেছিলাম মাথা তীব্র ধরে আছে। গভীরে নিমজ্জিত হওয়ার আফটার এফেক্ট। গোটাদিন ঘরের বাইরে যাইনি। বিছানায় শুয়েই কাটিয়ে দিয়েছলাম। দুপুরে বাড়ির মালিক খেতে দিয়েছিল বাসি মাছের ঝোল আর ভাত। মুখে দিয়েই বুঝেছিলাম এ রুচবে না মুখে। কিন্তু উপায় নেই। নাক চোখ বুজে তাই খেতে হয়েছিল। খাওয়ার পর বমিও হয়েছিল। বমি করে মাথা ধরা কমেছিল। আমি তখন দুঃখ বিলাস যাপন করতে শুরু করেছিলাম। আমার এক সিনিয়র বলেছিল আমরা সবাই কম বেশি দুঃখ বিলাসী। দুঃখকে যাপন করতে আদতে আমরা ভালোবাসি। আসলে আলস্য চেপে ধরে তখন এত তীব্রভাবে দুঃখের বাইরের পৃথিবীর কথা আমাদের মাথাতেই আসেনা। আমারও আসেনি। সারাদুপুর শুধু বড় গোলাম আলি খান গজল গেয়ে গেছেন।

সকালে চিত্রহার, বেলায় শক্তিমান কিংবা বড় হয়ে ম্যাটিনি শোয়ের সিনেমা। রবিবার কার্যকারিতা সময়ের সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে। ম্যাটিনি শোয়ের সাথে গোটা মফস্বলি সিনেমাহলটাই উঠে গেছে। দুপুরের সিনেমা এখন মোবাইল বন্দী হয়েছে। অফিসের ডিপ্রেসন উইকএন্ড পার্টিতে কাটানো হচ্ছে। এদিকে মেদিনীপুর লোকাল এখন লকডাউনের জন্য বন্ধ। বাড়ি যাওয়া আপাতত স্থগিত। আবার এক দুঃখ বিলাসী রবিবার হয়ত অপেক্ষা করে আছে। কিন্তু শেষ চেষ্টা তো করতেই হবে। জ্ঞানীরা বলেন যারা চেষ্টা করেন তাদের হার হয় না। আমি বলি শুধু চেষ্টা না সাথে টাকা থাকলেও হার হয়না। আমারও হল না। ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলাম গাড়ি চেপে। বাড়িতে আসার পর মোটা মানিব্যাগ পাতলা হয়ে গেছে বেশ বুঝতে পারছি। তবুও রবিবার বলে কথা না এসে থাকা যায় কি? এখনও কলোনির রাস্তা দিয়ে হাঁটলে প্রতি রবিবার দুই বাড়ি ছাড়া ছাড়াই মাংসের গন্ধ ভেসে আসে। নদীর ধারে এখনও তিনজন মিলে আড্ডা জমাই। দুপুরের ভাতঘুম এখনও প্রিয় আর রবিবারের প্রেম কৃষ্ণচূড়ায় সারা পথ ঢেকে যাওয়ার মতো স্বয়ংক্রিয়।

(ক্রমশ)

Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *