‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’-এর দরজা খুলছে ১১ জুলাই। বইপাড়ায়।
এই লকডাউনের আনলক পর্যায়ে আসছে আমাদের রান্নাঘরের ইতিহাস, ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’। সঙ্গে করে নিয়ে আসছে খুলনার কপোতাক্ষ নদের তীরে কলাপোতা গ্রাম আর ছেনু মিত্তির লেন।
না, আসলেই কোনো হোটেল নয়। একটি উপন্যাস। বইটি লিখেছেন কল্লোল লাহিড়ী। সৌজন্যে বয়সে নবীন প্রকাশনা, সুপ্রকাশ। প্রচ্ছদ এবং বইয়ের ভেতরের অজস্র অলংকরণ করেছেন শিল্পী মেখলা ভট্টাচার্য।
বইয়ের প্রচারে nirmukhosh.in -এর হাত ধরে সুপ্রকাশ প্রকাশ করেছে ” ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ পড়ার ভূমিকা-পুস্তিকা”। বাংলা প্রকাশনায় এরকম প্রয়াস যে অভিনব, তাতে সন্দেহ নেই। তবে সে নিয়ে প্রকাশনার অন্যতম কর্ণধার অসীম দাস আদৌ উচ্ছ্বসিত নন। তাঁর কথায়, “অনেক প্রকাশনাই নানাভাবে চেষ্টা করছেন মানুষের কাছে পৌঁছানোর, এরকম উদ্যোগও ঠিক এই আকারে না হলেও ভিন্ন আকারে কেউ না কেউ নিয়েছেন। আসলে বই জিনিসটা তো ধীরে ধীরে ইন্টারাকটিভ হয়ে উঠতে চাইছে অন্যান্য মাধ্যমের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে ওঠার জন্য। আমাদের আসল লক্ষ্য মানুষকে পড়ানো সেই কাজ, যা আমরা বিশ্বাস করি বলেই প্রকাশ করি।”
বইটি সম্পর্কেও একটা ধারণা তৈরীর জন্য পুস্তিকাটি থেকে প্রকাশকের কথনটি উদ্ধৃত করে দেওয়া যাক।
“ইন্দুবালা আমাদের বিগত প্রজন্মের। দেশ-ভাগের সময়বলয়ের জাতক যাঁরা। যাঁরা আমাদের ভুলে যাওয়া দেশের বাড়ির দরজা। বরিশাল কিংবা খুলনার খাল-বিলে ঘেরা স্বপ্নরাজ্য থেকে আধপেটা খাওয়ার খাদ্য-আন্দোলনের শহরে যাঁদের নির্বাসন।
দু বাংলাকে ধরে রাখেন তাঁরাই। কেউ রান্নায়, কেউ বরিশালি চান্দ্রদ্বীপি কথার টানে।
পূর্ব পাকিস্তান যেদিন হলো বাংলাদেশ, সেদিনই ছেনু মিত্তির লেনে প্রথম আঁচ পড়লো ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে। এই উপন্যাসে ছেনু মিত্তির লেনের ইন্দুবালা ভাতের হোটেল ছুঁয়ে আছে এক টুকরো খুলনা আর আমাদের রান্নাঘরের ইতিহাস– মন কেমনের গল্প।
ইন্দুবালার ঠাকুরদার মধ্যস্থতায় লেখক যখন বলেন, দ্যাশ কি লাউটা না কুমড়োটা যে ভাগ করলিই হলো , তখন তা পুরো বাঙালির কথন হয়ে ওঠে। আসলে এ উপন্যাসটি পুরোটাই বাঙালির কথন– ইন্দুবালার মধ্যস্থতায়। ইন্দুবালার স্মৃতি আর বর্তমানের ক্যালাইডোস্কোপে কল্লোল মুন্সীয়ানায় বুনতে পারেন একটা বিরাট সময়কে।– সেই কথন ছুঁয়ে থাকে আমাদের রান্নাঘর– পোস্ত ছিটানো কুমড়ো ফুলের বড়া, বিউলির ডাল, ছ্যাঁচড়া, চন্দ্রপুলি, চিংড়ির হলুদ গালা ঝোল, চুসির পায়েস আর আম তেল মাখামাখি হয়ে।”
এই পুস্তিকায় লেখক কল্লোল লাহিড়ী লিখেছেন তাঁর এই উপন্যাসটি লেখার অভিযাত্রার কথা। লেখকের এই আত্মকথটি আবার বইয়ে নেই, শুধু এই পুস্তিকাতেই মিলবে। দুটো লাইন সেই কথনের শেষ থেকে উদ্ধৃত করি। পুস্তিকাটির লিঙ্ক এই লেখার শেষ থেকে তো পাওয়া যাবেই :
“রান্না আমাদের মনের কথা বলে। পাত পেড়ে একসাথে হাপুশ হুপুশ করে খেতে খেতে গরম ভাতকে মনে হয় অমৃত। আর যাঁর রসনায় খাচ্ছি সামনের মানুষটি তখন ঈশ্বর। এঁদের সবাইকে নিয়ে আমার ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। ১১ জুলাই, শনিবার বিকেলে হোটেলের দরজা খুলবে। ভাগিরথী, ইছামতীর পাশে সেদিন বইবে কপোতাক্ষ।”
হ্যাঁ, ১১ জুলাই-ই তো ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ সবার জন্য খুলছে। কোথায় ? প্রকাশকের বইঘরে। ছেনু মিত্তির লেন থেকে খুব দূরে নয়। সুপ্রকাশ, সূর্য সেন স্ট্রিটে।
তবে বাড়িতে বসে অগ্রিম কিনে ফেলতে পারেন উদ্বোধনের দিনই হাতে পাওয়ার জন্য। thinkerslane.com থেকে এই লিঙ্কে ক্লিক করে কিনতে পারবেন সবাই : https://thinkerslane.com/?product=indubala-bhater-hotel
তবে তার আগে ছবি আর টুকরো টুকরো লেখায় মোড়া কুমড়ো ফুলের মিষ্টি বড়ার গন্ধটা তো নিয়ে নিন ” ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ পড়ার ভূমিকা-পুস্তিকা” থেকে। এই লিঙ্কে ক্লিক করে: ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ পড়ার ভূমিকা-পুস্তিকা