ইতিহাসের পথে পথে: একটি ক্রিকেট আলেখ্য। দশম পর্ব। লিখছেন সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়।

0

(গত পর্বের পর)

ভারতীয় ক্রিকেটে এই বাণিজ্যিকীরণের সূত্রপাত হয় ১৯৮৮-৮৯ মরশুমে। আঁচ অবশ্য পাওয়া গিয়েছিল ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপের সময় থেকেই। সেকথা পরে। আগে ১৯৮৮-৮৯ মরশুমের বিতর্ক টা আলোচনা করা যাক।

ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল ১৯৮৮-৮৯ ক্রিকেট মরসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করেছিল। ভারত ২ মার্চ থেকে ৩ মে ১৯৮৯ সালের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে চারটি টেস্ট ম্যাচ এবং পাঁচটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে, যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজ ৩-০ এবং ওডিআই সিরিজ ৫-০ ব্যবধানে জিতেছিল।

২৬ শে ফেব্রুয়ারী ১৯৮৯-এ ভারতীয় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দলটি ১৯৬১-৬২ সফর ছাড়া মোটামুটি একটি শালীন রেকর্ড বানিয়েছিল পরবর্তী  ক্যারিবিয়ান সফর গুলোয়। মাঝের বছর গুলোয় তখনও পর্যন্ত খেলা ২৪টি টেস্টে ভারত জিতেছে ২টি, হেরেছে ১০টি এবং ড্র করেছে ১২টি। সফরের প্রথমেই বোর্ড সভাপতি দলের (২৪৬ ও ১৮৩/৩) বিরুদ্ধে ভারত (৩৫৬ ও ৩০৭) ড্র করে।

তারপর প্রথম ওডিআই ম্যাচে ব্রিজটাউনে ৫০ রানে হেরে যায়। হেইন্সের অপরাজিত ১১৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ কে ২৪৮/৪ অবধি নিয়ে যায়। ভারত জবাবে ১৯৮/৮ তোলে। দ্বিতীয় ওডিআই ম্যাচে পোর্ট অফ স্পেনে ভারত (১৪৮) ৬ উইকেটে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে (১৫১/৪)।  পোর্ট অফ স্পেনেই তৃতীয় ওডিআই খেলায় আবার ভারত (১৯২) ৬ উইকেটেই হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে (১৯৩/৪)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিনিয়র টিমের বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানে ওডিআই সিরিজে পিছিয়ে থেকে ভারতীয় দল প্রথম শ্রেণির খেলা শুরু করে, যা ১১ মার্চ শেষ হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড প্রেসিডেন্টস একাদশের বিরুদ্ধে উল্লিখিত ম্যাচগুলি এবং প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের — দিলীপ ভেঙ্গসরকার, কপিল দেব, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, কিরণ মোরে — এবং অন্য দুজন, রবি শাস্ত্রী এবং চেতন শর্মাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। দলের অধিনায়ক ছিলেন কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনূর্ধ্ব-২৩ দলে কেনি বেঞ্জামিন অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যিনি সিনিয়র দলের হয়ে খেলেছিলেন। দুই দলের আরেক নিয়মিত খেলোয়াড় কার্ল হুপারকে খেলার জন্য বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অধিনায়ক ছিলেন ব্রায়ান লারা, তখন ১৯। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ভারতীয়রা ৪১১/৬ করার পর ঘোষণা করে। নভজ্যোত সিং সিধু এবং সঞ্জয় মাঞ্জরেকর তৃতীয় উইকেটে ১৭১ রানের জুটি গড়েন উভয়েই সেঞ্চুরি করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-২৩রা ৪০৫ রানে অলআউট হয়, লারা ২৩৭ বলে ১৮২ রান করেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর করেন। ১৭৭ বলে তার সেঞ্চুরি আসে ১২টি চারের সাহায্যে। ভারতীয়দের জন্য, নরেন্দ্র হিরওয়ানি (৫/১৫০) মুখ রক্ষার বোলিং করেন।

অ্যান্টিগার চতুর্থ ওডিআই খেলায় বেঙ্গসরকার ৮৮ করলে ভারত ২৩৭/৮ তোলে। জবাবে গ্রিনিজের ১১৭ রান করার ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ উইকেটে ২৪০ করে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায়।

জর্জটাউনের পঞ্চম ওডিআই খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৩.৫ ওভারে ২৮৯/২ তোলে। পুরো পঞ্চাশ ওভার খেলা হলে হেইনস (অপরাজিত ১৫২) সেদিনই ডবল সেঞ্চুরি করতেন। জবাবে ভারত ৪৪ ওভারে ১৮৮/৮ করে। ওই মাঠেই প্রথম টেস্ট ড্র হয়। রিচি রিচার্ডসনের ১৯৪ এর জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৩৭ করে। ভারত ১ উইকেটে ৮৬ তোলার পরে আর খেলাই হয়নি।

কিংস্টনে প্যাট্রিক প্যাটারসন (৫/৪৭) ভারতকে ১০৩/৯ এ আটকে দেয়। জবাবে বোর্ড ১৮৫/৩ তোলার পরে ম্যাচ ড্র। চারদিনের মধ্যে দ্বিতীয় দিন শেষ বেলা ও চতুর্থ দিন কেবল খেলা হয়।ব্রিজটাউনে দ্বিতীয় টেস্টে ভারত ৮ উইকেটে হারে। মঞ্জেরেকার প্রথম ও রবি শাস্ত্রী দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরী করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গ্রীনিজ প্রথম ও হেইনস দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরী করেন। প্রথম ইনিংসে বিশপ ছয়টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে মার্শাল পাঁচটি উইকেট পান।

পোর্ট অফ স্পেনেও ভারত ২১৭ রানে হেরে যায়। প্রথম ইনিংসে আর্শাদ আয়ুব ও দ্বিতীয় ইনিংসে কপিলদেব ৫ উইকেট পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের লোগী প্রথম ইনিংসে ৮৭ ও রিচার্ডসন দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৯ করেন। মার্শাল এগারোটা উইকেট পান। সাবিনা পার্কে জ্যামাইকার বিরুদ্ধে অবশ্য ভারত ভালো খেলে কিন্তু ম্যাচ ড্র হয়। সিধু ২৮৬ ও আজহার ১১১ করেন।

এরপর ঐখানেই চতুর্থ টেস্টে ভারত আবার ৭ উইকেটে হারে। সিধু গত ম্যাচের জের টেনে ১১৬ করেন। ওয়ালস ৬ উইকেট পান। কিন্তু রিচার্ডসন ও রিচার্ডস শতরান এর ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে যায় কিন্তু কপিলদেব ৬ উইকেট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত দাঁড়াতেই পারেনি। আসলে গোটা সফরেই ভারতীয়দের একপ্রকার গাছাড়া মনোভাব কাজ করছিল। যেখানে ভিভিয়ান রিচার্ডসের মতো তৃতীয় শ্রেণির বোলার গোটা ওডিআই সিরিজে ১৩ টা উইকেট নেন।

এরপরেই শুরু হয় সমস্যা। ভারত ৬ই মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট ভার্ণনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি অস্বীকৃত ওডিআই (এমনকি লিস্ট এ তালিকায় পড়েনি) ম্যাচ খেলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৫ ওভারে ১৮৬/৮ তোলে। অরুনলালের ৭৬ সত্বেও ভারত ৩ রানে হেরে যায় (৩৪ ওভারে ১৮৩)। মজার ব্যাপার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে লয়েড ও ভারতের হয়ে বিশ্বনাথ ও গাভাস্কার খেলেন, এঁরা তখন অবসর নিয়ে নিয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে এটা ‘মসালা ম্যাচ’ ছিল।

এরপরে নর্থ আমেরিকা কাপ বলে একটা সিরিজে ভারত খেলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। প্রথম ম্যাচ নিউ ইয়র্কে হয় ১৩ই মে। পাকিস্তান (১৬২) কে হারিয়ে দেয় ভারত (১৬৩/৫)। দ্বিতীয় ম্যাচ ১৫ই মে কানাডার টরেন্টোয়। ভারত করে ২২২/৯। জবাবে পাকিস্তান ২২৩/৬ তুলে জিতে যায়। ইমরান খান ব্যাট হাতে ৯১ ও বল হাতে ৩উইকেট নেন ৩৩ রানে। তৃতীয় ম্যাচ লস অ্যাঞ্জেলেসে ২১ শে মে। ভারত (১৮৮) এবারও হেরে যায় পাকিস্তানের কাছে (১৮৯/৬)।

এই ম্যাচ গুলি আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এই ম্যাচগুলোর আয়োজক ছিল একটি অস্বীকৃত মার্কিন ক্রিকেট বোর্ড। স্বীকৃত ক্রিকেট বোর্ডটি আইসিসিকে জানালে আইসিসি বিসিসিআই কে জানায়। বিসিসিআই কড়া পদক্ষেপ নেয়। বোর্ডের পাঁচ সদস্যের একটি শৃঙ্খলা কমিটি ছয় সিনিয়র ক্রিকেটার – দিলীপ ভেঙ্গসরকার, কপিল দেব, রবি শাস্ত্রী, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, কিরণ মোরে এবং অরুণ লালকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে – পাশাপাশি অননুমোদিত খেলায় অংশগ্রহণের জন্য তাদের ৩৫,০০০ টাকা জরিমানা করেছে।

আরও ছয়জন ক্রিকেটার অর্থাৎ সঞ্জয় মাঞ্জরেকর, রবিন সিং,  ভেঙ্কটারামনা, নরেন্দ্র হিরওয়ানি, সঞ্জীব শর্মা এবং অজয় শর্মাকে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের জন্য  ভারতীয় ক্রীড়া প্রেমীরা হতবাক হয়ে যায় এবং ক্রিকেট বিশ্বকে বিভক্ত হয়ে যায়। ক্রিকেট সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান রাজ সিং দুঙ্গারপুর বলেন:  “You could revamp the entire Indian Cabinet and nobody will notice. But you change one player in the cricket team and 600 million people will have a definite opinion on it because they genuinely believe it is their business.”

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন বিনীত কুমারের পক্ষে উপস্থিত হয়ে, বিশিষ্ট আইনজীবী সোলি সোরাবজি সুপ্রিম কোর্টে নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একে “বর্বর” বলে অভিহিত করেন এবং প্রশ্ন তোলেন ক্রিকেট কোন ধরণের জন্তু যে তাকে ‘কন্ট্রোল’ করতে হবে, যেহেতু বোর্ডের নাম ‘বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া।’

২৬ জন কংগ্রেস (আই) সাংসদ প্রতিবাদে একটি বিবৃতি জারি করেন, যেখানে এমনকি N.K.P সালভে  মাধবরাও সিন্ধিয়া, যাঁরা কংগ্রেসের নেতা ও ক্রিকেট প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত, এই নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেছিলেন।

এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য ক্ষুব্ধ সালভে দলের সহকর্মী এমপি এবং প্রাক্তন হকি অধিনায়ক আসলাম শের খানকে তিরস্কার করায় বিতর্কটি সংসদের পদক্ষেপে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ খান সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেন: “আপনি ক্রীড়াবিদদের সাথে তাওয়াইফদের  মতো আচরণ করেন।” বিষয়টি আরও  উদ্বেগজনক হয়ে যায় কারণ এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে পরবর্তী- নয়টি টেস্ট ম্যাচ এবং ২৩টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের ভবিষ্যত ঝুলে যায়।

প্রাক্তন অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদি এবং বিষেন সিং বেদি  নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করে বলেন, “খেলোয়াড়রা খেলার চেয়ে বড় নয়”। কিন্তু পাকিস্তান, শারজাহ এবং নিউজিল্যান্ডে ভারতের পরবর্তী সফরের আয়োজকরা  বিরক্ত হয়ে ওঠে।

প্রাক্তন অধিনায়ক এবং তৎকালীন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান গ্রাহাম ডাউলিং বলেন: “আমরা এখানে প্রথম সারীর ভারতীয় দল চাই। দ্বিতীয় সারীর দল অবশ্যই মাঠে লোক কমিয়ে দেবে “।

শারজায় ক্রিকেটার্স বেনিফিট ফান্ড সিরিজের একজন মুখপাত্র ইঙ্গিত দেন যে আসন্ন শারজাহ কাপের জন্য ভারতের ১৩.২ লক্ষ টাকার গ্যারান্টি মানি অর্ধেক করা হতে পারে।

পরের সফর ছিল পাকিস্তানে। পাকিস্তানি বোর্ড আন্তরিকভাবে সঙ্কট কেটে যাবে বলে আশা করেছিল। “ভারত-পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মতো। দলগুলোর গঠন যাই হোক না কেন ভিড় আসে। কিন্তু আমরা অবশ্যই আপনার প্রধান খেলোয়াড়দের মিস করব। কে করবে না?” বিবৃতি দেন পাকিস্তান বোর্ডের করাচি-ভিত্তিক সেক্রেটারি আরিফ আব্বাসি।

গুজব রটে যায় যে  শ্রীকান্তকে নিয়ে একটা নতুন দল তৈরি হতে পারে, কদিন আগেও যায় ফিটনেস সমস্যা ছিল। এছাড়াও, বেশ কিছু প্রতিশ্রুতিশীল কিশোর (শচীন নিশ্চিত ভাবে) থাকলেও, ভারতীয় ক্রিকেটে সত্যিই কোনো বেঞ্চ শক্তি নেই। একটি নতুন দল তৈরী হতে পারে তখনই প্রাক্তনী হয়ে যাওয়া সন্দীপ পাতিল, রজার বিনি, মদন লালদের নিয়ে।

ব্যাপারটা আরও জটিল হয় যখন রুংটা, মাধব মন্ত্রী, বিশ্বনাথ দত্ত, আই এস বিন্দ্রা ও খানমন্দিকর বিষয়টি নিয়ে এই কঠোর সিদ্ধান্ত চালিয়ে যান। এর আগেও বোর্ড ভেঙ্গসরকার কে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে লেখালিখির জন্য ছয় মাস সাসপেন্ড করে এবং মহিন্দর অমরনাথ কে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাদ দিলে তিনি বোর্ডকে ‘বাঞ্চ অফ জোকার্স’ বলে ঘোষণা করেন।

এদিকে আইসিসি কে অভিযোগ করেছিলেন USCA এর প্রধান নাজিরুদ্দিন আহমেদ যিনি একজন ফিলাডেলফিয়ায় বসবাসকারি পাকিস্তানি। এদিকে সিরিজের আয়োজক হলেন আরও দুই পাকিস্তানি তব্বসুম আলি ও মেহমুদ আহমেদ যাঁরা ইউএস ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড চালান। এই সিরিজের ম্যাচ গুলির জন্য তাঁরা প্রতিটি খেলোয়াড়কে ভারতীয় মুদ্রায় ৩৩০০০ টাকা দেন। তাঁরা গোটা বিষয়টিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে দাবী করেন ১৯৯০ এর সিরিজে ৫০,০০০ লোকের নিউ ইয়র্ক শি স্টেডিয়াম ভাড়া করা হবে আর ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি খেলোয়াড়কে উপযুক্ত পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে।

বেদি পেশাদারিত্বের সংজ্ঞা নিয়ে বোর্ডকে সমর্থন করলেও ক্রিকেটাররা অন্য অভিযোগ করছিল। ভেঙ্গসরকার অভিযোগ করেন যে সফর থেকে ভিভ রিচার্ডস ৪.৮ লাখ টাকা পেয়েছে যেখানে তিনি পেয়েছেন ৬৫,০০০। তাছাড়া খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনা না করেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে দিনে ৯০ ওভার করে বল করার নিয়মে বোর্ড রাজি হয়ে যায়। তাছাড়াও অরুনলাল পরিষ্কার বলে বসেন একজন জন ব্যবসায়ী ৪৫ বছর কর্মক্ষম থাকেন। ক্রিকেটাররা মেরে কেটে ১০/১৫ বছর। ফলে ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে বেশি আয় তো খুবই প্রয়োজন।

অরুণলালের ওপর দায়িত্ব পরে নতুন চুক্তি পত্র বানানোর। বোর্ড সন্দীপ পাটিল কে প্রায় তৈরী থাকতে বলে। দমদমে বোর্ডিং পাস খুঁজে না পাওয়ায় পরের প্লেনে আসতে হয় অরুণ লালকে। অতিরিক্ত টেনসনে বোর্ডের চুক্তিতে সই করেন ক্রিকেটাররা। অরুণ লাল এসে দেখেন সব লড়াই শেষ।

পাকিস্তান সফরে নির্বাচিত হন শচীন। টেস্ট ম্যাচ ফি বেড়ে ১০,০০০ থেকে এক লাফে ৫০,০০০ হয়। রবিন সিং সাসপেন্ড না হলেও ৭ বছরের মধ্যে আর সুযোগ পাননি। সাবা করিমের সুযোগই আসেনি ৮ বছরের মধ্যে। অরুনলাল আর মহীন্দর অমরনাথ আর কোনোদিন ভারতীয় দলে ফেরেননি। প্রথম জন ১৯৯৪-৯৫ অবধি খেলা চালিয়ে যান। দ্বিতীয় জন ১৯৯৩-৯৪ অবধি।

পেশাদারিত্ব, অর্থ ও বাণিজ্যিকীকরন শুরু হলো।

(ক্রমশ)

Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *