ইতিহাসের পথে পথে: একটি ক্রিকেট আলেখ্য। ত্রয়োদশ পর্ব। লিখছেন সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়
ঠিক এই পটভূমিকায় একবার আমরা আলোচনা করে দেখি ক্রিকেটে বাংলাদেশের উত্থান। এশিয়ার চতুর্থ টেস্ট খেলিয়ে দেশের পক্ষে আয়তনের জন্যই ক্রিকেটের বড় বাজার হিসেবে উত্থান সম্ভব ছিল। যার পটভূমিকা তৈরী ছিল বহুদিন যাবৎ।
ঊনবিংশ শতাব্দী থেকেই পূর্ববঙ্গে ক্রিকেট ম্যাচ নিয়মিত খেলা হত। আচার্য দীনেশচন্দ্র সেনের আত্মজীবনী গ্রন্থে, সারদারঞ্জন রায় ও বসন্তকুমার গুহর ক্রিকেট খেলা থেকে তা জানা যায়। ঢাকায় সবথেকে পুরনো ম্যাচ—১৮৫৮ সালের ২০শে জানুয়ারি ঢাকা স্টেশন ও হার ম্যাজেস্টি ৫৪ রেজিমেন্ট এর মধ্যে খেলা হয়। ১৮৭০ এর দশকের শেষে ঢাকাতে বয়েজ ক্লাব তৈরী হয়েছিল।
১৮৭৬/৭৭ সালে যখন প্রথম টেস্ট খেলা হয় মেলবোর্নে তখন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে নেমেছিলেন ব্রানসবি কুপার। তিনি ১৮৪৪ সালে ময়মনসিংহে জন্মান। তাঁর বাবা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মী ছিলেন। মা কলকাতার বিখ্যাত সুইনহো পরিবারের মেয়ে। প্রথম টেস্টের সঙ্গেই পূর্ববঙ্গের নাম বড় করে জড়িয়ে যায়।
১১ই ডিসেম্বর, ১৮৮২ সাল; তৎকালীন বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার অগাস্টাস রিভার্স থমসনের সম্পূর্ণ প্রদেশ ভ্রমণের শেষে কলকাতায় ফেরা উপলক্ষে প্রথম বারের জন্য বাঙালি ও ইউরোপীয় একসঙ্গে ইডেনে খেলতে নেমেছিল। এর আগে বাঙালি ও ইউরোপীয়দের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ খেলা হলেও সেই ম্যাচ ইডেনে হয়নি। ইডেনে এই প্রথম বাঙালিরা খেলতে নামেন। এই ম্যাচটিকে প্রথম ‘নেটিভ’-দের খেলা ‘পাবলিক ম্যাচ’ বলে চিহ্নিত করা হয়। ম্যাচটি খেলা হয়েছিল ঢাকা ও কৃষ্ণনগরের মধ্যে। ঢাকা দল তুলনামূলক ভাবে শক্তিশালী ছিল। ঢাকার বজ্রযোগিনী গ্রামের জমিদার বাড়ির তিন ভাই বসন্তকুমার গুহ, অশ্বিনীকুমার গুহ ও যোগেন্দ্রকুমার গুহ ঢাকার হয়ে খেলতে নামেন।
১৯১১ সালে বেঙ্গল জিমখানা ঢাকায় গিয়ে দু- তিনটি ম্যাচ ও খেলেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আবহে। ঢাকায় নিয়মিত লীগের খেলা হত, সেন অ্যান্ড সেন কাপ, স্ট্যানলি জ্যাকসন কাপ হত,– ভিক্টোরিয়া ক্লাব, উয়ারী খেলত, কলকাতা থেকে টাউন, স্পোর্টিং ইউনিয়ন, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল সবাই যেত। কোচবিহার কাপে (ট্রফি নয়) নিয়মিত ক্রিকেট খেলতে আসত পূর্ববঙ্গের দলগুলি। ময়মনসিংহ জেলার পন্ডিতপাড়া কলেজ ও গ্রামের মধ্যে তিনদিনের বার্ষিক ম্যাচ হত। এই পণ্ডিত পাড়ার ছেলে হেমাঙ্গ বসু পরে কলকাতার ময়দান কাঁপিয়ে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতেন।
ঢাকায় প্রথম বড় ম্যাচ হয় ১৯৪০/৪১ মরশুমে। ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০। প্রথম শ্রেণির খেলা না হলেও বেঙ্গল জিমখানা বনাম বেঙ্গল গভর্নর দলের ম্যাচ বেশ আকর্ষনীয় ছিল। জিমখানা দলে কার্তিক বসু, গণেশ বসু, তারা ভট্টাচার্য, কমল ভট্টাচার্য্য, জিতেন ব্যানার্জী, ধ্রুব দাস, বিমল মিত্র, অর্ধেন্দু দাস, সন্তোষ গাঙ্গুলী (হকি ও ক্রিকেট আম্পায়ার) খেলেন। গভর্নর দলে বিনু মানকড়, শুঁটে ব্যানার্জি, সি কে নাইডু, নাজির আলী, নাউমুল জাউমুল, প্রবীর সেন খেলেছিলেন।
দেশ ভাগ ঢাকায় লীগ অসমাপ্ত করে দেয়। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে পূর্ব-বঙ্গ আত্মপ্রকাশের পরে সেখানে জোর কদমে ক্রিকেট ম্যাচ শুরু হয়। পূর্ব পাকিস্তান থেকে ক্লাব বাদ দিয়ে অন্ততঃ পঁচিশটি দল ক্রিকেট খেলেছে। যার ভেতর তেরোটি দল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দল। যখন পাকিস্তান ভারত সফরে প্রথম আসে (১৯৫২-৫৩) তখন ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের ইস্টবেঙ্গল রেলওয়ে মাঠে ও ১লা জানুয়ারি ঢাকার মাঠে তাঁরা খেলতে নামেন পূর্ব পাকিস্তানের বিপক্ষে। যদিও এগুলি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ছিল না।
পূর্ব পাকিস্তান মোট কুড়িটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে। দুইবার তাঁরা কায়েদ-এ-আজম ট্রফির সেমি ফাইনালে ওঠে। পূর্ব পাকিস্তান ছাড়াও এই অঞ্চল থেকে পূর্ব পাকিস্তান এ, পূর্ব পাকিস্তান বি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এডুকেশন বোর্ড, পূর্বাঞ্চল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ে ইত্যাদি দল খেলত। কায়েদ-এ-আজম ছাড়াও তাঁরা আয়ুব ট্রফি খেলত। যদিও ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা দল নামত, কিন্তু খুব বেশি উন্নতি হয়নি তাতে।
অন্ততঃ ছয়জন ক্রিকেটার পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট খেলেন যাঁরা পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেন, কিন্তু তাঁরা কেউ বাঙালি ক্রিকেটার ছিলেন না।
যেমন মাসুদ হুসেন( লাহোরে জন্মানো পাঞ্জাবী ক্রিকেটার), হরিয়ানায় জন্মানো (তখন দক্ষিণ পাঞ্জাব) মুফাসসির উল হক, দিল্লিতে জন্মানো নাসিম উল ঘানি, গোয়ালিয়রে জন্মানো নৌসাদ আলী ,নিয়াজ আহমেদ। বহু বাঙালী খেলোয়াড় এই দলগুলিতে সাফল্যের সঙ্গে খেলেন। যেমন, আলাউদ্দিন (ঢাকা ও পূর্ব পাকিস্তান), আলতাফ হোসেন (ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান গ্রীন), সৈয়দ আশরাফুল হক( প্রথম আন্তর্জাতিক মানের বাংলাদেশী ক্রিকেটার), জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা, শহীদ হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ক্রিকেটার হালিম চৌধুরী ওরফে জুয়েল, রাকিবুল হাসান, সুকুমার গুহ প্রভৃতি।
এই অভিযোগ প্রথম দিন থেকে উঠেছে যে পাকিস্তান বাঙালীদের সুযোগ দিত না। ঢাকায় লীগ হত ম্যাটে। এমনকি টেস্ট পর্যন্ত। প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তান ঢাকায় সাতটি টেস্ট খেলে (১৯৯৮-৯৯ মরশুমে আরও দুটি), স্বভাবতই কিছু ট্যুর ম্যাচও খেলত। এমসিসি, কমনওয়েলথ, ইন্টারন্যাশনাল ইলেভেন, সিলোন, ভারত প্রভৃতি। এই ম্যাচগুলোয় পশ্চিম পাকিস্তানের থেকে খেলোয়াড় এনে খেলানো হত। এতদসত্বেও পূর্ব পাকিস্তান আরও একবার সেমি ফাইনাল খেলে অধিকাংশ বাঙালী খেলোয়াড় নিয়ে। ১৯৭০-৭১ মরশুমের কায়েদ-এ-আজম পূর্ব পাকিস্তান বয়কট করে।
দেশ স্বাধীন হল। বাংলাদেশ তৈরী হল। আইসিসি-র স্বীকৃতি পাওয়ার পরে এমসিসি খেলতে এল ১৯৭৬-৭৭ মরশুমে। যদিও এই ম্যাচকে বেসরকারি টেস্ট বলে চালানো হয়েছিল, কিন্তু আদপে এটি তা ছিল না, কারণ সহযোগী সদস্য না হওয়ার কারণে প্রথম শ্রেণির খেলা বাংলাদেশে হত না, ফলে এই তিনদিনের খেলা প্রথম শ্রেণির স্বীকৃতি পায়নি।
এরপরেই বাংলাদেশে খেলতে যায় শ্রীলঙ্কা, যদিও এগুলোও প্রথম শ্রেণির খেলার স্বীকৃতি পায়নি। ১৯৭৮-৭৯ সালে হায়দ্রাবাদ ব্লুজ ও সফর করে। ওই বছরই এমসিসি আবার খেলতে আসে পাঁচটি খেলা। এরপরেই বাংলাদেশ প্রথমবার আইসিসি ট্রফি খেলতে যায় ইংল্যান্ডে। প্রথম ম্যাচে ফিজি কে হারিয়ে দেয় তাঁরা। আশরাফুল হক ২৩ রানে ৭ উইকেট নেন। পরের খেলায় জাহাঙ্গীর বাদশা ১৭ রানে ৪ উইকেট নিলেও কানাডার কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ৭ উইকেটে হারালেও শেষ ম্যাচে কানাডার কাছে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশ।
১৯৮০-৮১ সালে এমসিসি সফরে আসে আসে। ১৯৮২ সালে আইসিসি ট্রফিতে পরপর দুই ম্যাচে পশ্চিম ও পূর্ব আফ্রিকাকে হারিয়ে দিলেও ফিজি ও সিঙ্গাপুর ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ভেস্তে যায়। পরের দুই ম্যাচ মালয়েশিয়া ও বারমুডার কাছে হেরে যায়। যদিও নেদারল্যান্ড কে হারিয়ে সেমি ফাইনালে উঠে জিম্বাবুয়ের কাছে ৮ উইকেটে হেরে যায়। তৃতীয় স্থান নির্ধারণের খেলায় অবশ্য পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থান পেল।
১৯৮৩-৮৪ সালে তাঁরা প্রথমে ভারত ( অর্থাৎ বাংলা ) সফর করে। তারপর হং-কং কে সাউথ ইস্ট এশিয়ার প্রতিযোগিতায় হারিয়ে জয়ী হয়। এরপরে তাঁরা কেনিয়া ও পাকিস্তান সফর করে। সেই সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ঢাকায় দামাল সামার (পুরোনো কারদার সামার), ঢাকা মেট্রোপলিস ফার্স্ট ডিভিশন লীগ, আলফা ক্লাবের টুর্নামেন্ট, ভিকট্রি ডে ম্যাচ, ইউনিভার্সিটি ক্রিকেট নিয়মিত খেলা হতো। তাছাড়া ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামে খেলা হতো, জাতীয় ক্রিকেট লীগে জেলা দল গুলি খেলতো, উইলস ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন শিপ হতো, এইসময়ের মধ্যে পাকিস্তান এয়ারলাইন্স, হং কং, হায়দ্রাবাদ ব্লুজ (ভারত), সিএবি, শ্রীলঙ্কা, এমসিসি, কলকাতার এরিয়ান ক্লাব বাংলাদেশ সফরে যায়। তাছাড়া পাকিস্তান ও একবার এসেছিল। চট্টগ্রামে একটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেললেও, ঢাকায় বাংলাদেশের বিরূদ্ধে ম্যাচ রায়ট লেগে বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৮৬ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম খেলতে নামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এটাই তাঁদের প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এরপরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচেও তাঁরা খেলেন, যেটার যদিও কোনও প্রশ্নই ছিল না। কিন্তু ১৯৮৬ সালের আইসিসি ট্রফির খেলায় কেনিয়া আর আর্জেন্টিনা ছাড়া সবার কাছে তাঁরা হেরে যান। যাও পশ্চিম আফ্রিকা বা সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে জিততে পারতো তাও ধুলিস্যাৎ হয় পশ্চিম আফ্রিকা আইসিসি থেকে বহিষ্কৃত ও সিঙ্গাপুর প্রতিযোগিতা থেকে নাম তুলে নেওয়ায়।
সেই সময় অ্যাফিলিয়েটেড বা অ্যাসোসিয়েটস সদস্য দের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ ছিল কম। ফলে সমস্যা ছিল তাঁদের ক্রিকেটীয় উন্নয়নে। এই কারণেই হংকং কে হারিয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ট্রফি জেতা ছাড়া বড় কাজ কিছুই হয়নি বাংলাদেশের।
১৯৮৮/৮৯ মরশুমে বাংলাদেশ এশিয়া কাপ, ১৯৮৯/৯০ মরশুমে অস্ট্রালেশিয়া কাপ ও ১৯৯০/৯১ মরশুমে এশিয়া কাপ খেলে। ১৯৮৬-১৯৯০ অবধি তাঁরা ৯টি ওডিআই খেলেছিল, যা সেই সময়ের অ্যাসোসিয়েট দের মধ্যে জিম্বাবুয়ে (১০টি) ও কানাডা (৩টি) ছাড়া কারোরই ছিল না। কিন্তু তাতেও বাংলাদেশকে দেখে মনে হতো না তারা ওডিআই খেলার মতো পারফরম্যান্স করতে পারছে। ইতিমধ্যেই ১৯৯০ সালের আইসিসি ট্রফির প্রথম রাউন্ডের বি গ্রুপের খেলায় কেনিয়া, বারমুডা ও ফিজিকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে। সেখানে নেদারল্যান্ডসের কাছে হারলেও ডেনমার্ক ও কানাডাকে হারিয়ে সেমি ফাইনালে ওঠে। কিন্তু দুবার বিশ্বকাপ খেলা জিমাবুয়েকে হারাতে পারেনি তাঁরা।
এরপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিযোগীতায় আবার হংকং কে হারায়। এরপর সার্ক এর দেশ গুলো থেকে দল নিয়ে সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হলে একমাত্র বাংলাদেশের জাতীয় দল ছাড়া ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা তাঁদের ‘এ’ দল পাঠাতো। প্রথম বার ১৯৯২-৯৩ সালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে, পাকিস্তানের কাছে হেরে, ভারতের ম্যাচ রায়টের জন্য পরিত্যক্ত হলে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে ফাইনালও পরিত্যক্ত হয়।
এরপর ক্রমশ জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশ সফর, বাংলাদেশের হংকং যাওয়া বা পাকিস্তানের বাংলাদেশে সফর সব মিটে যাওয়ার পরে বাংলাদেশ মনোযোগ দেয় আইসিসি ট্রফি ১৯৯৪ এর ফেব্রুয়ারী মাসে। কারণ পরবর্তী বিশ্বকাপ ছিল উপমহাদেশে। কিন্তু বাংলাদেশ পারলো না। যাওবা প্রথম রাউন্ডে আর্জেন্টিনা, ইস্ট অ্যান্ড সেন্ট্রাল আফ্রিকা ও আমেরিকাকে হারিয়ে ছিল (কেবলমাত্র আরব আমীরশাহীর কাছে হেরেছিল), দ্বিতীয় রাউন্ডে নেদারল্যান্ড আর কেনিয়ার কাছে হেরে যায়, হংকং এর কাছে জেতে।
ওই বছর ডিসেম্বর মাসে আবার সার্ক ক্রিকেট হয়। এবারে পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে আর ভারতের বিরূদ্ধে ১ রানে জিতে ফাইনালে ওঠে। ফাইনালে ভারত অনায়াসে জয়ী হয়। ১৯৯৫ এর এশিয়া কাপে আবার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। প্রায় পাঁচ বছর বাদে ওডিআই খেলতে নেমে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচেই হারে। ওই বছর হংকং, কেনিয়া আর ইংল্যান্ড ‘ এ ‘ বাংলাদেশ সফর করে।
এই সময় ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা আর ইংল্যান্ড থেকে বড় ক্রিকেটারদের দামাল সামার টুর্নামেন্টে খেলানো হতো। বিপুল জনপ্রিয় এই টুর্নামেন্টে অসম্ভব ভীড় হতো মাঠে। ঢাকা মহামেডান, আবাহনী, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, ইগলেটস, কলাবাগান, উয়ারী, ভিক্টোরিয়া ক্লাবের খেলা দেখতে উপচে পড়তো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। আক্রম খান, আতাহার আলী খান, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, সজল চৌধুরী, খালেদ মাসুদ পাইলট, হাসিবুল হুসেন শান্ত- দের নাম মুখে মুখে ফিরতো।
বস্তুত: ১৯৯৫ সালে দূর্বল বাংলাদেশের শেষ পর্যায়ের সূত্রপাত। এইখান থেকেই শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেট বাজারের উত্থানের। যার একটা বড় কারণ ১৯৯৬ এর বিশ্বকাপ। সেটা আলোচনা করবো পরের বার।
(ক্রমশ)