সৌভাগ্যশলাকা। ধারাবাহিক উপন্যাস। পর্ব ১১। লিখছেন অলোক সান্যাল

গ্যাস স্টেশনের পরেই বাস একটা বড়ো রাস্তায় উঠে পড়েছিল। কিছুটা এগিয়ে একটা ছোটো গোল পার্ক থেকে ডানদিকে নেমে গেল। গোলাপি পোশাকের পর্যটকের দল, যারা এতক্ষণ বাস ভরে রেখেছিল, তাদের যাত্রা সম্ভবত এখানেই শেষ। ছোটো দরজা দিয়ে কে আগে বের হবে, তা নিয়ে একপ্রস্ত ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল সকলে।
‘আমরাও কি নেমে পড়ব?’
এলিন নিজেও বোনের প্রশ্নের জবাব খুঁজছিল। পর্যটকের দলকে পিছু নিয়েই তারা উঠে দাঁড়াতেই স্টিয়ারিংয়ের পেছনে বসে থাকা চালকের সঙ্গে তার চোখাচোখি হলো। ইশারায় বলল তাদের সময় হয়নি। বাকিরা নেমে যেতে বাসের চাকা গড়াতে শুরু করে দিল আবার। বাধ্য হয়ে বসে পড়ল এলিন। পাশে এমা। মিনিট পাঁচেক যেতে না যেতে আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। বড্ড ধকল সহ্য করতে হয়েছে মেয়েটাকে। সামনের মোড় থেকে বাস ডানদিকের রাস্তা নিতেই এলিন বুঝতে পারল আশপাশের পরিবেশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দু’পাশে সবুজ। বসতি আছে, তবে ছাড়া ছাড়া। আরও কিছুটা এগোতে তাও অদৃশ্য হয়ে গেল। এলিনও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। গত একুশ-বাইশ ঘণ্টা ধরে তার নিজের শরীরও যথেষ্ট ধকল নিয়েছে। শুকিয়ে ফেটে যাওয়া ঠোঁট দুটোয় জিভ বুলিয়ে সে নিজেকেই বলল, ‘শুধু আরও একটু জল হলে ভালো হত।’
তারপর অজান্তেই অন্ধকার নেমে এল এলিনের চোখের পাতায়।
বাসটা ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যেতেই একসঙ্গে ঘুম ভাঙল দু’জনের।
‘কোথায় এলাম রে!’
‘জানি না।’
বোনের প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাব দিল এলিন। তার ইন্দ্রিয়গুলো আবার সতর্ক হয়ে উঠতে শুরু করেছে। সিট ছেড়ে পাইলট কেবিনের দিকে এগিয়ে গেল সে। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই তরুণ ড্রাইভারটি ঘাড় ঘোরাল।
‘আপনাদের নামার সময় হয়ে গেছে। এখান থেকে গাড়ি করে সুইস বর্ডার পেরোতে হবে। কাগজপত্র সব সঙ্গে আছে? না থাকলে…’
না থাকার কথা নয়। দেশের বাইরে থাকলে পাসপোর্ট এবং পরিচয় পত্র সবসময় সঙ্গে রাখা দুই ভাইবোনের অভ্যাস। অসহ্য গোলাপি টি-শার্ট খানা খোলার কথা এলিনের মাথায় ছিল না। এবার উৎকট রং থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে জ্যাকেটের ভেতরের পকেটে হাত দিল। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে এমার দিকে নজর ঘোরাতে দেখল, সে একহাতে নিজের পাসপোর্ট অন্য হাতে পরিচয় পত্র তুলে ধরেছে। ড্রাইভারের কথা শুনতে পেয়ে নিশ্চয়ই।
‘আছে। কিন্তু বর্ডার পেরিয়ে কোথায়?’
এলিনের প্রশ্নে কাঁধ ঝাঁকিয়ে উত্তর দিল তরুন ড্রাইভার।
‘আমার জানা নেই মিস্টার। যতটুকু জানি, বলেছি।’
এলিন আর কথা বাড়াল না। এমাকে ইশারা করে নিচে নেমে এল। হাত-পা ঝাড়া অবস্থা একেবারে। ঘুম ভাঙার পর থেকেই শরীর আবার জল চাইছে। সঙ্গে খাবারও। চাইলেও সে চাহিদা মেটাবার উপায় এখানে নেই।
‘কোনো মানে হয়! একটা রেস্তোরাঁ, নিদেনপক্ষে কফি শপের সামনে নামতে পারল না হতচ্ছাড়াটা!’
‘সত্যি রে, জোর খিদে পেয়েছে। তেষ্টাও।’
সিণ্ডে ফোর্টে ইঁদুর দিয়ে ব্রেকফাস্ট সারবার কথা মনে পড়তেই হেসে ফেলল এলিন।
‘তোর জন্য তোফা নাস্তার কথা ভেবে রেখেছিলাম। তার বদলে হাজির হলো সেই লোকটা।’
‘সত্যি… কে বল তো? অন্ধকারে মুখটা ঠাওর করতে পারি নি, কিন্তু গলার স্বর খুব চেনা মনে হচ্ছিল!’
‘আমারও। সেন্ট-মরিস চার্চ লাইব্রেরির সেই বয়স্ক লোকটাকে মনে আছে? বইয়ের মধ্যে মুখ গুঁজে বসেছিলেন।’
‘ওই যে, আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়েছিল! সেই লোকটা?’
‘হতে পারে… নাও হতে পারে।’
বলেই বোনের হাত শক্ত করে ধরল এলিন। একটা গাড়ির শব্দ। খুব কাছে। আশেপাশে নজর বুলিয়ে হতাশভাবে ভাবে মাথা নাড়ল সে। শত্রু নাকি মিত্র, বোঝার জন্য একটু আড়াল দরকার। উপত্যকার মাঝ দিয়ে চলে গেছে কালো রাস্তাটা। গাছপালা সব আকাশের গা ঘেঁষে। প্রিয় পিস্তলটা সামিরা টিসডেলের কাছেই জমা রয়ে গেছে। এখন শত্রুর মুখোমুখি হলে সম্বল বলতে দুটো হাত আর পা। এলিন তাই নিয়েই প্রস্তুত হলো।
ফিকে হয়ে যাওয়া লাল রঙা রেনল্টের পুরনো মডেলের গাড়িটা ঠিক তাদের পাশে এসে দাঁড়াল। এবার আর তরুণ নয়, প্রৌঢ় ড্রাইভার। মুখ সামান্য ঝুঁকিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিস মিলার?’ তারপর জবাব পাওয়ার আগেই, একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে তাড়া দিল, ‘উঠে পড়ুন স্যার। সিফট বদলের আগেই আমাদের সীমান্ত পেরোতে হবে। বিকেলের শিফটে নতুন চ্যাংড়া অফিসারটা বড্ড ভোগায়।’
ভ্যালোরসাইন। দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের সীমান্ত লাগোয়া ছোট্ট একটা গ্রাম। শ চারেক বাসিন্দা। প্রায় ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে সুইস বর্ডার। সেই সীমারেখা একটু আগেই পেরিয়ে এসেছে তারা। স্বল্পায়ু গ্রীষ্মের সময় শ্যামোনি ভ্যালির টানে বেশ কিছু পর্যটকের দেখা মেলে। ঢালু সবুজ ঘাসজমি ভেঙে উঠে গেলে পাথর এবং আরোলা পাইনে তৈরি দ্বিতল নিবাস।
গাড়িটা নিচেই নামিয়ে দিয়েছে তাদের। হেঁটে উঠে আসছিল দু’জনে। পেছনের কণ্ঠস্বর দাঁড় করাল।
‘মিলারস?’
ঘুরে জিজ্ঞাসু চোখে তাকাল এমা এলিন।
‘নমস্কার। আমি শ্যারন ভ্যালাস। আপনাদের জন্য গত তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছি। এত দেরি হলো! কোথাও আটকে পড়েছিলেন বুঝি?’
ঠিক কী উত্তর দেওয়া যায় বুঝে উঠতে পারছিল না এমা। ভদ্রমহিলা নিজেই বাঁচিয়ে দিলেন।
‘অবশ্য আল্পসের রূপই এমন। যেখানেই থাকুন না কেন, সহজে চোখ ছাড়া করতে মন সায় দেয় না। দেখবেন, ভ্যালোরসাইনও আপনাদের চট করে নড়তে দেবে না। একমাস পরে মনে হবে, আরও কটা দিন থেকে গেলে ক্ষতি নেই।’
‘একমাস!’ প্রায় চমকে উঠল এমা।
‘বুকিং তো সেভাবেই করা হয়েছে! অবশ্য তার থেকে তিনটে দিন আপনারা ইতিমধ্যে খরচ করে ফেলেছেন। চাইলে থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারেন। তবে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেবেন। এরমধ্যে নতুন গেস্টের অনুরোধ চলে এলে, আমি আর তা ফেলতে পারব না।’
হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছিল ওরা।
‘আমরা হয়তো দিন দুই তিনের জন্য আছি শ্যারন।’
এলিনের কথায় কি হোলে চাবি ঢুকিয়েও থমকে দাঁড়ালেন ভদ্রমহিলা।
‘সেক্ষেত্রে চুক্তি অনুসারে কোনো রিফান্ড পাবেন না মি. মিলার।’
বলেই গলার সুর বদলে নিলেন শ্যারন।
‘সবেমাত্র এলেন। একটু রেস্ট নিন। ধকল কিছুটা কমলে দেখবেন, জায়গাটার প্রেমে পড়ে গেছেন।’
দারুণ পেশাদার ভদ্রমহিলা! কথা বলার ধরনেই বোঝা যাচ্ছিল। বাড়ির ওপর এবং নিচ তলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। এমা সাধারণত নতুন আলাপে সহজে নিজেকে খোলে না। এখানে তাকে উলটো পথে হাঁটতে দেখে এলিনের কিঞ্চিৎ অবাক লাগলো। দু’জনে এরমধ্যেই বেশ খোশগল্প শুরু করেছে! গল্পের টুকরো-টাকরা না চাইতেই কানে পৌঁছে যাচ্ছে।
শ্যারন ভ্যালাস, গৃহের কর্ত্রী। দারুণ পরিশ্রমী। একাই দিব্যি এই ছোট্ট গ্রামে, যাবতীয় প্রতিকূলতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টিকে আছেন গত বারো বছর ধরে! শ্যারনের স্বামী আল্পসেই চিরতরে হারিয়ে গেছেন। দাফন করার জন্য শরীরটাও মেলেনি। একমাত্র ছেলে ফরাসি সেনাবাহিনীতে। ছুটি-ছাটায় আসে। একাকীত্ব তবুও পঞ্চাশ বর্ষীয়া শ্যারনকে কাবু করতে পারেনি। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। এমাকে হিটারের ব্যবহার বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন ভদ্রমহিলা। সেসব টুকিটাকিতে এলিনের নজর আটকাচ্ছিল না। তার পেট বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে। ডাইনিং নিচে। ওক কাঠের বড়ো টেবিল। লাগোয়া কিচেন। রান্নার সমস্ত উপকরণ সেখানে মজুত। সীমানায় তেষ্টা মেটানোর সুযোগ পেলেও কোনো দোকানপাট চোখে পড়েনি। জঠরজ্বালা নেভানোর উপায় ছিল না। এলিন ইতিমধ্যেই ফ্রিজ খানাতল্লাশি করে ফেলেছে। মাংস এবং সবজিতে উপচে পড়ছে। এলিন দুটো প্রোটিন বার নিয়ে একটা এমাকে দিল। দুধও রয়েছে। সেলফে কর্ণফ্লেক্স। হাত না পুড়িয়ে খিদের হাত থেকে সামান্য হলেও রেহাই পাওয়া যাবে। অবশ্য সেদিকে হাত বাড়ানোর আগেই শ্যারন দারুণ প্রস্তাব দিলেন।
‘এতটা পথ পেরিয়ে আপনারা নিশ্চয়ই ক্লান্ত। শুধুমাত্র আজকের জন্য দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা যদি আমি করে দিই, আপত্তি আছে?’
‘একেবারেই না মিসেস ভ্যালাস।’
‘বেশ। তবে আপনারা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিন। ওপরে এবং নিচের বাথরুম আলদা। অসুবিধে হবে না। আমি ততক্ষণে স্যান্ডউইচ বানিয়ে ফেলি। আশাকরি ক্রোক মঁসিয়র খেতে আপনাদের মন্দ লাগবে না। সঙ্গে গরম কফি।’
কাঠের সিঁড়ির মুখটায় গিয়ে ঘুরে দাঁড়াল এলিন।
‘একটা সমস্যা আছে শ্যারন। আমাদের সঙ্গে কোনো লাগেজ নেই। গরম পোশাক…’
‘কী বিচ্ছিরি ব্যাপার বলুন তো। আমি আজ সকালেই খবরটা পেলাম। এদিকটায় আগে কখনো এমন চুরির ঘটনা শুনিনি! আপাতত ঠাণ্ডা সামাল দেওয়ার মতো কিছু গরম পোশাক ওয়ার্ডরোবে রাখা আছে। আজ হয়তো সময় হবে না, কাল আপনারা প্রয়োজনীয় যা কিছু বাজারে পেয়ে যাবেন।’
এলিন ভদ্রমহিলাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওপরে উঠে গেল। প্রায় দুটো দিন হতে চলল একই পোশাক পরে আছে। যদিও এখানে ঠাণ্ডার দাপট বেজায়, তবু গরম জল দিয়ে স্নানের পর, শরীর অনেকটাই তরতাজা হয়ে উঠবে।
সামনে ঢালু হয়ে নেমে গেছে সবুজ ঘাসজমি। আর কয়েক মাস পরে তুষারে ঢেকে যাবে। যূথবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা নানা ধরনের পাইন, স্প্রুসেরাও সাদা চাদরে ঢাকবে নিজেদের। অতিথি নিবাস ঘিরে রয়েছে লার্চ গাছেদের দল। যেন আগুন লেগেছে তাদের গায়ে! ওপরের কাচে ঘেরা বারান্দা থেকে তিনদিকে অনেক দূর পর্যন্ত নজর যায়। আল্পস ঘিরে রেখেছে এই উপত্যকা। ছড়িয়ে থাকা বনাঞ্চল। তাদেরও।
লাঞ্চের পর বারান্দায় পাশাপাশি রাখা লাউঞ্জ চেয়ারগুলার একটা দখল করেছিল এমা। এলিন পাশে। পার্বত্য উপত্যকায় সন্ধে নামছে ধীর অথচ নিশ্চিত পদক্ষেপে। অনেকক্ষণ চুপচাপ ছিল দু’জনে। মৌনতা ভাঙল এমা, ‘এসবের পেছনে কে আছে বল তো? সেন্ট-মরিস চার্চ লাইব্রেরির বুড়োটা! কে তিনি? কেনই-বা তিনি আমাদের জন্য জীবনের ঝুঁকি নেবেন?’
প্রকাশ না করলেও এলিনের মাথার মধ্যে একই প্রশ্ন নাগাড়ে ঘুরপাক খেয়ে চলেছে। ফোর্ট সিণ্ডের গোপন কয়েদখানা থেকে কে তাদের জাল কেটে বের করে আনল? নিখুঁত পরিকল্পনায় সীমান্ত পার করে দিল! এমন একটা নিশ্চিত আশ্রয় আগে থেকেই জুটিয়ে রেখেছিল কে? কীভাবে সে জানল তারা বিপদে পড়তে পারে? মাথার জট যত ছাড়াতে চাইছে, তত ঘোলাটে হয়ে আসছে। দায়ে সারা জবাব দিল এলিন, ‘আমিও উত্তর খুঁজছি সিস্টার। পাচ্ছি কই?’
ছায়া জমতে শুরু করেছে চারপাশে। আল্পসের শিখরমালা, ঢ্যাঙা পাইন গাছের দল সেই ছায়ার আড়াল নিতে শুরু করেছে। নিচের রাস্তায় একজোড়া চলমান জ্বলন্ত চোখকে এসে থমকে দাঁড়াতে দেখল এলিন। এতক্ষণ ধরে অদৃশ্য কুয়াশা এবারে নজরে এল। তীব্র আলো মেখে এলোমেলো উড়ে যাচ্ছে। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল এলিন। উত্তেজিত স্বরে বলল, ‘সম্ভবত উত্তর নিজেই এসে হাজির হয়েছে এমা। চল, নিচে যাই। ভদ্রলোক আমাদের জন্য অসম্ভব সব কাণ্ড ঘটিয়েছেন! দরজাতেই তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো উচিত।
নিচে একটা স্বল্প ক্ষমতার আলো জ্বালানো ছিল। এলিন নেমে প্রথমে সেই অভাব দূর করে দিল। বাইরের আলোটাও জ্বালিয়ে দিতে ভুলল না। তারপর দুই ভাই এগিয়ে গেল দরজার সামনে। পাল্লাটা খুলতেই ছুরি নিয়ে মুখের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল আল্পসের কনকনে বাতাস। ঢালু নুড়ির রাস্তায় একটা সিল্যুয়েট। ধীর পা ফেলে উঠে আসছে। ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ছবিটা। গাঢ় রঙের হাঁটু ঝুল কোট। মাথায় ফেদোরা টুপিটা ঈষৎ নেমে মুখের রহস্যময় অন্ধকারভাব এখনো ধরে রেখেছে। ঋজু দেহের সঙ্গে ভীষণ বেমানান একটা ছড়ি ধরা রয়েছে ডান হাতে। পাথরে ঠোকর খেয়ে অস্পষ্ট ধাতব শব্দ তুলছে সেটা। বাঁ হাতে একটা বড়োসড়ো ডাফল ব্যাগ। বাইরের অর্ধ আলোক বৃত্তের মাঝে এসে ছবিটা স্থির হলো। আর তারপর, মাথা সামান্য উঁচু করতেই মুখের ওপর থেকে অন্ধকারের মুখোশ খসে পড়ল।
‘জোনাথন ডারওয়ার্ড!’
ভাইয়ের হাত সজোরে চেপে ধরে শুধু নামটাই বলতে পারল এমা।
(ক্রমশ)