অক্ষর-চরিত্র ও জ্ঞাপন-বাণিজ্য : এক অন্তহীন এপিটাফ। পর্ব ২৫। অনন্ত জানা

0

(গত পর্বের পর)

সাত : বাংলা পোস্টারের বিবিধ শিল্প-পরিসর

বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা শিল্পী জয়নুল আবেদিন (১৯১৪-১৯৭৬) তো প্রকৃত অর্থেই গণশিল্পী ছিলেন। দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা তাঁকে খ্যাতিই শুধু দেয়নি, সময়-দেশ-মানুষকে শিল্পীরা কোন দৃষ্টিতে দেখতে পারেন তার এক সার্বজনিক মডেলও তৈরি করেছে। সস্তার কাগজে তুলি বা ব্রাশ আর কালি দিয়ে আঁকা ৪৩-এর মন্বন্তরের এই চিত্রকলার সবটাই পোস্টারের ভাষাকে শিল্পভুবনের ভাষায় পরিণত করেছে। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা ছবিটিতে পোস্টারের শিল্পভাষা উৎকীর্ণ হয়েছে, এমন কী ৩০ফুট দীর্ঘ স্ক্রোল ‘মনপুরা ৭০’ ছবিটিকেও একটি অতিকায় পোস্টার বলা যায়।

সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধের সময় সৃজনশীল রাজনৈতিক পোস্টারের জোয়ার দেখা দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণামূলক পোস্টার অঙ্কনে নিতুন কুণ্ডু (১৯৩৫-২০০৬ / পুরো নাম : নিত্যগোপাল কুণ্ডু), প্রাণেশকুমার মণ্ডল, দেবদাস চক্রবর্তী প্রমুখর নাম করা যায়। প্রাণেশকুমার আঁকেন ‘বাংলার মায়েরা মেয়েরা সকলেই মুক্তিযোদ্ধা’ এবং নিতুন কুণ্ডুর আঁকেন ‘সদা জাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী।’ প্রথমটিতে শাড়ি-পরা রাইফেল হাত-ধরা বাঙালিনী, অন্যটিতে পুরুষের হাতে-ধরা রাইফেল―দুটিতে দুই মুক্তিযোদ্ধার স্কেচ। দেবদাস চক্রবর্তী যে পোস্টারটির ডিজাইন করেছিলেন তাতে মন্দির, মসজিদ, মঠ ও গির্জার সারণিকৃত সিল্যুয়েট ছিল। কমলা জমিতে নতুন ভোরের মতো সাদা রিভার্সে লেখা ছিল―‘বাংলার হিন্দু / বাংলার খৃষ্টান / বাংলার বৌদ্ধ / বাংলার মুসলমান’ আর সিল্যুয়েটের নিচে ‘আমরা সবাই / বাঙালি’ বাক্যটি প্রত্যয়দীপ্ত শপথের মতো ব্যবহৃত হয়েছিল। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ঢাকা কর্তৃক পুনর্মুদ্রিত ॥ এখানে দেবদাস চক্রবর্তী অঙ্কিত পোস্টারটির নিচে শিল্পীর নাম মুদ্রিত আছে। কিন্তু শুভেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত ‘বাংলা পোস্টার দুই বাংলার লেখা ও ছবি’ গ্রন্থে এটি আমিনুল হাসানের অঙ্কিত বলে নির্দেশ করা হয়েছে)

আরেক খ্যাতনামা শিল্পী কামরুল হাসান (১৯২১-১৯৮৮) মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খানের ভয়ঙ্কর এক মুখাবয়ব এঁকে ছিলেন। এই পোস্টারের বয়ানে ছিল স্পষ্ট ঘোষণা  ‘এই জানোয়ারদের / হত্যা করতে হবে।’ এরই ইংরেজি বয়ান ‘অ্যানাইহিলেট / দিজ ডেমনস্’। স্বাধীনতার পর স্বৈরশাসক এরশাদের শাসনকালকে ব্যঙ্গ করে কামরুল হাসান (তাঁকে পটুয়া বলে ডাকা হতো)-এর স্কেচ ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’ এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে অন্যতম শক্তিশালী পোস্টারমাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাজী হাসান হাবিব (১৯৪৯-১৯৮৮)-এর আঁকা ‘বাংলাদেশ বনপোড়া হরিণীর মতো আর্তনাদ করে’ একটি সাড়া-জাগানো পোস্টার। শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী (১৯৩২-২০১৪) পোস্টার ডিজাইনে অন্য মাত্রা যোগ করেছিলেন। গ্রাফিককলার নিরীক্ষামূলক ব্যবহার, টাইপোগ্রাফির সুষম বিন্যাস, রঙের উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরীক্ষা, ভাবে, ভাষায় অনন্যতা কাইয়ুমের পোস্টারকে শিল্পচিহ্ন দিয়েছে―‘পোস্টারে প্রচারণাই লক্ষ্য। জনগণকে কিছু জানানোই এর মূল কাজ। কাইয়ুম শুধু এই জানান দেওয়ার পোস্টারে আগ্রহী ছিলেন না। অমন পোস্টারে মানুষ একবার দেখেই তাকে ছেড়ে হেঁটে চলে যাবে। কাইয়ুম চান তাঁর পেইন্টিংয়ের সামনে মানুষ যেমন দাঁড়িয়ে ভাবে, ঠিক সেভাবে পোস্টারের সামনেও দাঁড়াবে ও ভাববে। টাইপোগ্রাফি আর ক্যালিগ্রাফির খেলা দেখেই বিমোহিত হবে মানুষ, পোস্টারের রং, প্রতীক কিংবা মোটিফ গেঁথে নেবে মনে।’ (মইনুল ইসলাম জাবের : ২০২২) এই ছিল তাঁর পোস্টার নির্মাণের লক্ষ্য। ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য পোস্টার ছিল, মুক্তিযুদ্ধের কাল পেরোবার পরই তিনি পোস্টার রচনায় মনোযোগ, মেধা ও সময় ব্যয় করেন। এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার অভিঘাতলব্ধ পোস্টার থেকে শুরু করে বিপর্যস্ত মানুষের বেদনার চিত্রলিপিসহ বহু আনুষ্ঠানিক পোস্টার রচনা করেন।

১৯৮৭ সালে বাংলাদেশের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নূর হোসেনের শরীরে লেখা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ শ্লোগান লেখা মানব পোস্টারই হয়তো বাংলা পোস্টারের জগতে সবচেয়ে সাড়া-জাগানো পোস্টার। ঐ বছরের ১০ নভেম্বর নূর হোসেন ‘মানব পোস্টার’ হয়ে স্বৈরাচারবিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। নূর হোসেন শহীদ হন, কিন্তু তাঁর মানব পোস্টার কিংবদন্তি হয়ে বেঁচে থাকে মানুষের চিরজয়ী স্বাধীনতা আকাঙ্ক্ষায়! এই সময়ের রাজনৈতিক শ্লোগানও গ্রাফিতিতে পরিণত হয়, যেমন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখা হয় ‘সামরিকতন্ত্রে লাথি মারো, গণতন্ত্র ফিরায়ে আনো।’

সাবেক ‘পূর্ব পাকিস্তানে পোস্টারের বিকাশে চলচ্চিত্র প্রচারণার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।’ বাংলাপিডিয়া জানিয়েছে―তখন লাইন-ড্রইংয়ে নায়ক-নায়িকাদের আঁকা হতো। এটা ঠিকই যে, ১৯৫৬ সালে, বিভাগোত্তরকালে পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘের সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ থেকেই সিনেমা পোস্টারের ইতিহাসের সূচনা ধরে নেওয়া হয়, কিন্তু সব শুরুরও একটা শুরু থাকে। বিভাগপূর্বকালে পুরান ঢাকার কমার্শিয়াল শিল্পীরা দেয়ালচিত্রের মধ্য দিয়ে ঢাকায় সিনেমা প্রচারণার শুরু করেন। ১৯৪০-৫০-এর দশকে ঢাকায় এ-ধরনের দেয়ালচিত্রের প্রধান শিল্পী ছিলেন পীতলরাম সুর নামের এক শিল্পী। (মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ : ২০২২) আসাদুল্লাহর রচনা থেকে আরও জানা যায় যে, দেশভাগের পর ঢাকায় সিনেমা প্রচারে ব্যানারের গুরুত্ব বাড়ে। ৯০-এর দশকের প্রথমেও সিনেমা হলের বাইরে পোস্টারের সঙ্গে কাপড়ে লেখা ব্যানরও শোভা পেত। ঢাকার এই ব্যানার লেখায় প্রথম সারিতে ছিলেন মুনলাইট সিনেমা হলের মালিক মোহাম্মদ সেলিম। তাঁর কাছে কাজ শিখে অনেকেই পোস্টার আর্টিস্ট হয়েছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম গুলফাম ও আনোয়ার। ঢাকার বাইরের সৈয়দপুরের আবদুল ওহাব ছিলেন সিনেমা পোস্টার অঙ্কনের নামকরা শিল্পী। এইসব পোস্টার ও ব্যানার শিল্পীদের অনেকেই ছিলেন ভারত থেকে আসা অভিবাসী।

মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত বহু শিল্পী চলচ্চিত্রের পোস্টার অঙ্কন করেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন সুভাষ দত্ত, আবদুল মালেক, হাশেম খান, এজেড পাশা, সুশীল বন্দ্যোপাধ্যায়, যতীন্দ্রকুমার সেন, সুতান সরকার, দাউদ ওস্তাদ প্রমুখ। লক্ষণীয় এই যে, প্রতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাপ্রাপ্ত প্রথিতযশা শিল্পীরাও সিনেমা পোস্টার আঁকায় হাত লাগিয়েছিলেন। ভাস্কর নিতুন কুণ্ডু, মুর্তজা বশীর, কাইয়ুম চৌধুরী, আজিজুর রহমানের মতো শিল্পীরাও সিনেমা পোস্টার আঁকেন। আসাদুল্লাহ জানান সুভাষ দত্ত তো বটেই, গাঁর প্রণোদনায় নিতুন কুণ্ডু পোস্টার ও ব্যানার আঁকার মধ্যে দিয়ে কেরিয়ারের সূচনা করেন। তাঁর পোস্টার আঁকার মুন্সিয়ানা দেখেই জয়নুল আবেদিন নিতুন কুণ্ডুকে আর্ট কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন। চলচ্চিত্র পরিচালক আজিজুর রহমানও পোস্টার লিখিয়ে হিসেবেই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন!

সত্তর ও আশির দশকে গিরিন দাস এবং বিদেশকুমার ধর বাংলাদেশের সিনেমা পোস্টার শিল্পে উল্লেখযোগ্য নাম। আসাদুল্লাহ (তদেব)-র ভাষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের সিনেমা পোস্টারে দুই ধারার পোস্টার শিল্পী নজরে আসেন। বাণিজ্যিক বা কমার্শিয়াল মঈন, দুলারা, লাদলা, রফিক, গিরিন দাস, গুলফাম, আনোয়ার, মোজাম্মেল, এমদাদ, বিদেশকুমার ধর, হরিদাস প্রমুখ। এবং সুিশক্ষিত ও রীতিমতো দীক্ষাপ্রাপ্ত উল্লিখিত নামের প্রখ্যাত শিল্পীরা, অর্থাৎ কাইয়ুম চৌধুরী, নিতুন কুণ্ডু, মুর্তজা বশীর, হাশেম খানের মতো দুরস্ত শিল্পীর দল। আশির দশকের পর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অন্যধারার সিনেমার সূচনা হয়। এই সময়  সিনেমা পোস্টার আঁকেন শিশির ভট্টাচার্য, ঢালী আল মামুন, তরুণ ঘোষ, শাওন আকন্দ, কামরুল হাসান, রফিকুন নবী প্রমুখ। সম্ভবত এই সময়েই থিমেটিক সিনেমা পোস্টার রচনার কাজ শুরু হয়। রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক পোস্টার অঙ্কনেও এঁদের যোগদান তো ছিলই।

প্রখ্যাত শিল্পীদের অনেকেই সিনেমা পোস্টার আঁকছেন দেখলে প্রাথমিকভাবে আশ্চর্য হতে হয়। যেমন মুর্তজা বশীর (১৯৩২-২০২০)। কিংবদন্তি ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহের পুত্র বশীর ছিলেন একাধারে দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষিত শিল্পী, কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, চিত্রনাট্যকার, প্রবন্ধকার, সহকারী চিত্র পরিচালক, গবেষক, শিক্ষক, মুদ্রাসংগ্রাহক, মুদ্রণবিদ, কার্টুনিস্ট। আপাত-বিমূর্ত ও প্রমূর্ত (যাকে বলা হয়েছে ‘বিমূর্ত বাস্তবতা’) ধারায় মানুষের ‘বিক্ষত-বেদনার প্রস্তরীভূত চেহারা’ বাইরের মসৃণতার অন্তর্দেশে নিরন্তর বিস্ফোরণ ও ক্ষতের মুদ্রণ! দেয়ালের ভাঙনের মধ্যে প্রদাহকীর্ণ ‘অস্তিত্ববাদী একাকীত্ব’ নিয়ে চিত্রচর্চা করলেও বশীরকে জন-অনুপ্রেরিত প্রকাশ্য ময়দানের শিল্পী বলতে হয়। প্রথমে ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়ে বশীর পোস্টার, ফেস্টুন, কার্টুন এঁকেছেন (বক্ষ্যমাণ রচনায় প্রকাশিত দ্বিতীয় পোস্টারটি বশীরের ‘একুশের আঁকা, একুশের লেখা’ গ্রন্থের প্রচ্ছদরূপে ব্যবহৃত হয়েছে) ―তারপরেও পোস্টারে, ব্যানারে, ফেস্টুনে, উডকাটে, লিনোকাটে, এচিংয়ে, দেয়াললিখনে বশীর জাগ্রত থেকেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বশীর ছাপচিত্র ব্যবহারের একটা ধারা গড়ে তোলেন। ‘ছাপচিত্রই সবচেয়ে গণতান্ত্রিক মাধ্যম’।

বিভাগোত্তরকালে পশ্চিমবঙ্গীয় পোস্টার শিল্পে খ্যাত-অখ্যাত শিল্পীদের গণ-অংশগ্রহণ লক্ষণীয়মাত্রায় ধরা পড়ে। শহর-গ্রামের সংখ্যাতীত শিবেন-যতীশ-সুমন পোস্টার এঁকেছেন, দেয়াল লিখেছেন। পুরোদস্তুর শিল্পীদের কথাই যদি ধরা যায়―তবে কেই-বা আঁকেননি পোস্টার? রামকিঙ্কর থেকে চিত্তপ্রসাদ, দেবব্রত মুখোপাধ্যায় থেকে মীরা মুখোপাধ্যায়, বিজন চৌধুরী থেকে খালেদ চৌধুরী, সোমনাথ হোড় থেকে হিরণ মিত্র―সকলেই পোস্টারের ডিজাইন করেছেন বা তাঁদের চিত্রকর্ম পোস্টারে ব্যবহৃত হয়েছে। রাজনৈতিক পোস্টার, নাটকের পোস্টার, আনুষ্ঠানিক পোস্টার তো বটেই  তো বটেই সত্যজিৎ রায় ছাড়াও প্রশিক্ষিত শিল্পীরা সিনেমার পোস্টারও কম করেননি। এদের মধ্যে আছেন ও সি গাঙ্গুলি, রণেন আয়ন দত্ত, অভিজিৎ গুপ্ত, খালেদ চৌধুরী, দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু পত্রী প্রমুখ। (শুভেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত প্রাগুক্ত গ্রন্থ) পোস্টারের কথা বস্তুত অন্তহীন। গণনাতীত পোস্টার ও পোস্টার শিল্পীর আবেগী কর্মকুশলতায় পোস্টারের জগৎ স্পন্দিত। আমাদের স্বখ্যাত শিল্পীদের  বহুজন এই রাস্তার শিল্পের চর্চা করেছেন। পোস্টারের বিপুল সমৃদ্ধি ও বৈচিত্র্যের  উল্লেখই এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট। সেই বিপুলতার  একটি অনুমিত রেখাচিত্র অঙ্কন বা তাঁদের নামের একটি নির্ভরযোগ্য তালিকা প্রণয়ন করাও অসম্ভব বললে কম বলা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় (১৮৩৯) ব্রিটিশ পত্রিকা ‘পাঞ্চ’-এর শিল্প সম্পাদক ছিলেন ফুগাসে [নিজ নাম : সিরিল কেনেথ বার্ড (১৮৮৭-১৯৬৫)]। বিনা পারিশ্রমিকে ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রচারণামূলক গ্রাফিতিক পোস্টার তৈরি করেছিলেন। সেই গ্রাফিতির মধ্যে লোকপ্রিয় হয়েছিল―‘বিঅয়্যার। দি ওয়ালস্ হ্যাভ ইয়ারস্’, ‘শপ টক, মে বি স্যাবোটক’, ‘ওয়ার্নিং! ওয়ালস্্ হ্যাভ ইয়ারস্। / বি কেয়ারফুল দ্যাট হোয়াট ইউ সে’, ‘ডু নট ফরগেট দ্যাট ওয়ালস্্ হ্যাভ ইয়ারস্ / কেয়ারলেস টক কস্টস্্ লাইভস্’―ইত্যাদি ইত্যাদি। এই সময় ফুগাসের তত্ত্বাবধানে এই জাতীয় বহু প্রচারণা রচিত হয়। প্রপাগাণ্ডিস্ট হলেও সেকালে এগুলির যথেষ্ট প্রভাব ছিল। পরে পোস্টারের মধ্যস্থতায় দেয়ালশিল্পের এই ধারার বিস্ফোরণ প্রমাণ করে দেয় যে, দেয়ালের কান আছে, দেয়াল দেখতেও পায়, দেয়াল বলতেও পারে!

 

(ক্রমশ)

…………………………..

(রচনার সঙ্গের ডিজাইনগুলি শিল্পীর দ্বারা অঙ্কিত বা পুনরঙ্কিত, আন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত ও সম্পাদিত এবং বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে গৃহীত। রচনার শেষে একটি বিস্তারিত সূত্র পরিচয়ে তা উল্লেখিত হবে)

Author

Leave a Reply