‘স্বর্ণকুমারীর মৃত্যু ও জীবন’ : একটি পাঠ-পরিক্রমা। মহুয়া বৈদ্য
১৯৯৪ সাল। স্বাধীনতার পর কেটে গেছে সুদীর্ঘ আটচল্লিশ বছর। একটি মেয়ে ‘সাধারণ মানুষের মতো এক সুস্থ জীবন বাঁচতে চেয়েছিল’ এবং সে বাঁচতে পারে নি। ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে সাংবাদিক জানকী নায়ার একটি রিপোর্ট লিখেছিলেন টেলিগ্রাফ কাগজে, ব্যাঙ্গালোর থেকে। উত্তর কর্ণাটকের একটি গ্রামে ২১ বছরের একটি দলিত মেয়েকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। মেয়েটি তাদের গ্রামে প্রচলিত দেবদাসী প্রথার সাথে নিজেকে সংযুক্ত করতে চায় নি। ১৯৯৪ সালে এই ঘটনা যখন ঘটছে, তার প্রায় ১২ বছর আগে দেবদাসী প্রথাকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য কর্ণাটক সরকার “The Karnataka Devadasis (prohibition of dedication) Act 1982 এই শিরোনামে একটি সার্কুলার জারি করেছিল। কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই প্রথা তখনো দিব্যি রয়ে গিয়েছিল।
এই ঘটনাকে আধার করে সম্প্রতি একটি উপন্যাস পড়লাম। জয়া মিত্রের লেখা ‘স্বর্ণকুমারীর মৃত্যু ও জীবন’। উপন্যাসটি আমাদের ভারতবর্ষের দলিত সমাজের একটি জ্বলন্ত দলিল বললেও কম বলা হবে। লেখকের ভাবনা এবং বুনন খুব নিখুঁতভাবে, আমাদের ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে কিভাবে আইনের সমস্ত কিছু নসাৎ হচ্ছে, তার একটি সম্পূর্ণ সুডৌল চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। উপন্যাসটির পাঠ-পরিক্রমা আপনাকে অন্য একটি ভারতবর্ষের সামনে দাঁড় করিয়ে দেবে, যে ভারতবর্ষ দলিতদের উপর অত্যাচারের ভারতবর্ষ, যে ভারতবর্ষে দলিতরা ব্যবহৃত হন ভোটের ইস্যু হিসেবে, যে ভারতবর্ষে গণধর্ষণ ও খুনকে সহহেই বদলে দেওয়া যায় অসুস্থতাজনিত মৃত্যতে, যে ভারতবর্ষে আইন চালু হলেও ভূমির অতলে ফল্গুধারার মতো বয়ে চলে সেই আইন না মানার অথবা ভাঙার অবিরত তীক্ষ্ণ ধারাস্রোত।
আমরা এখন গিয়ে পৌঁছব লেখিকার কল্পনার নাগহল্লি গ্রামে। পাঠক, মনে করুন, এটি উত্তর কর্ণাটকের কোনো একটি জেলার রুখুসুখু গ্রাম। এইগ্রামে দেবদাসী মায়েরা তাদের যুদ্ধের জীবন কাটাচ্ছেন। এই গ্রাম এতই রুখাসুখা যে জোলাডা রোটি (বাজরার রুটি) বানানোর জন্য আগুন জ্বালাতে হয় না, তপ্ত পাথরের গায়ে রুটি মেলে দিলে ‘এক ঘণ্টার মধ্যে তা শুকিয়ে ঝনঝনে হয়ে যায়’। সেই রুটির সাথে জোটে বাদাম আর শুকনো লঙ্কার চাটনি কিংবা তুর ডাল। কোনো কোনো দিন পুঁইশাক বা বেগুন বা ভেন্ডির পল্ল্যা (তরকারি)। আর মাসে একদিন মাত্র ভাত, সেদিন ‘মুত্তাইদে হুন্নিমে’র দিন। সেদিন ইয়েলাম্মার সধবা হওয়ার দিন। জলের জন্য নাগহল্লির মায়েদের একফোঁটা সৌভাগ্য অবশ্য আছে। অনেক যুগ আগে চম্পকী নামে এক দেবদাসীকে গাঁয়ের পাটিল এখানে এনে রেখেছিলেন, আর তার জন্য এক ‘বাভি’ বানিয়েছিলেন। অন্য গাঁয়ের মায়েদের জলের জন্য খুব কষ্ট। গ্রামের সীমানা পেরিয়ে ক্ষেত পেরিয়ে একটি মাত্র ‘কেরে'(পুকুর) সেখান থেকেই মায়েরা আর তাদের ছেলেমেয়েরা কাদাজল সংগ্রহ করে, সেইজলের কাদা থিতিয়ে গেলে তবে তা পানের উপযোগী হয়। তাদের মাথায় থাকে দুটো “কপলে”, কাঁখে “বিন্দিগে”, অথবা দুহাতে দুটি “ডোল”।সামান্য জল আর খাবার জোগাড় করতেই প্রাণান্ত।
এমন বিরুদ্ধ পরিবেশে আরো বিরুদ্ধ পরিস্থিতির শিকার হয়ে আছেন নিংগাম্মা, কনকাম্মা, ললিতাম্মার বিরজাম্মার মতো মায়েরা। তাঁরা দেবতাদের জন্য উৎসর্গীকৃতা। কিন্তু দেবতার নামে তাদের ভোগ করে উঁচু জাতের ‘গৌড়ে’রা। এরা মূলত: দলিত সম্প্রদায়ের নারী গোষ্ঠী। এমনই দলিত সম্প্রদায়ের দেবদাসী পরিবারে জন্ম আমাদের স্বর্ণকুমারীর। তাঁকে জানকী নায়ার বলেছিলেন স্বর্ণাভা, আর গাঁয়ের সবাই তাঁকে আদর করে বলতো সোনাব্বা। “সারাটা গ্রাম সোনাব্বা বলতে অজ্ঞান”।
সোনাব্বা দেবদাসী কনকাম্মার মেয়ে। কনকাম্মা কিছুতেই তাঁর এই মেয়েটিকে বিধিনির্দিষ্ট ফ্রেমে ফেলতে পারেন নি। এই মেয়ে ছোট থেকে ইয়েলাম্মার মন্দিরে যেতে চায়নি। ‘মাকে সে পরিস্কার বলে দিয়েছে ও কাজ তাকে দিয়ে হবে না।’ এই অবস্থায় নিরক্ষরতা দূরীকরণের সরকারি প্রকল্পে যুক্ত হয়ে সোনাব্বা পড়তে শেখে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে কাজে যোগদান করে। নির্ভীক এই মেয়েটি কর্মক্ষেত্রেও প্রতিটি অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতো। দেবদাসী সম্প্রদায় থেকে আসা প্রতিটি মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের কৈফিয়েত চাইতো সে। প্রতিবাদ জানাতো শিশুদের খাবার নিয়ে দুর্নীতি হলে। এই মেয়েটিই একদিন উচ্চপদস্থ প্রশাসন অধিকর্তাদের দ্বারা ধর্ষিতা ও খুন হয়। তার মৃতদেহ রাতারাতি পুড়িয়ে ফেলা হয়।
সাংবাদিক জানকী নায়ারের রিপোর্টে এত কথা কিছু ছিল না। ছোট একটি রিপোর্ট কিন্তু লেখিকার মনে এর অভিঘাত ছিল খুব বেশি। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ পনেরো বছর লেখিকা রীতিমতো গবেষণা করেছেন, নিজে ছুটে গেছেন চেন্নাই শহরে, শ্রদ্ধেয় কন্নড় লাইব্রেরিয়ানের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন অসংখ্য বই, অপ্রকাশিত গবেষণাপত্র, ইয়েলাম্মা-চর্চা বিশারদের সাথে কথা বলেছেন … বলা যায়, মরে যাওয়া সোনাব্বাকে অতি যত্নে অতি সতর্কতায় তিনি যেন তিল তিল করে আবার নির্মাণ করলেন। সোনার বরণী মেয়ে স্বর্ণকুমারী, লেখিকার উপন্যাসে নতুন করে জন্ম নিলেন, মরে যাওয়ার পনেরো বছর পর।
এই উপন্যাসে সোনাব্বার গল্পের সাথে জড়িয়ে রয়েছে আরেক মেয়ের গল্প, যার নাম জানকী। জানকী তথাকথিত উচ্চবর্ণের মেয়ে। এই জানকীকে পাঠক প্রথমেই দেখবেন একজন প্রতিষ্ঠিত সৎ সাংবাদিক হিসেবে, যার বর্তমান নাম যমুনা দাস। জানকী ভালোবেসেছিলেন দলিত ছেলে কানাইকে। বিয়ে করেছিলেন তাকে। উচ্চবর্ণের পরিবার নির্মমভাবে তাদের তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। পুলিশ কাস্টডিতে অবর্ণনীয় অত্যাচারে কানাই মারা যায়।
দুটি মৃত্যু। বলা ভালো দুটি দলিত মানুষের মৃত্যু। লেখিকা অসামান্য দক্ষতায় দুইজন দলিত মানুষের নিষ্পেষিত মৃত্যুকে একই কম্পাঙ্কের চিৎকারে মিলিয়ে দিয়েছেন….’আঁ আঁ আঁ আঁ’ এই চিৎকারের কোনো লিঙ্গভেদ হয় না। আর, হাস্যকর প্রশাসন ব্যবস্থায় নিম্নবর্ণের সোনাব্বা ধর্ষিত হয় উচ্চপদের আধিকারিক দের কাছে, আর উচ্চবর্ণের জানকী জানে, ‘বারোদিন আর থানায় চারদিন আর জেলখানায় পনেরো দিন কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে একটা মেয়েকে’। বড়ো বিচিত্র আমাদের এই দেশ!
হ্যাঁ, বড়ো বিচিত্র আমাদের এই দেশ, এখানে এত কালোর পাশেও আলো হয়ে ফুটে আছে কিছু কিছু ভালো। গোটা উপন্যাসটির সমস্ত ঘটনা যখন অসম্ভব কষ্ট হয়ে গলার কাছে ব্যথার দলা তৈরি করছে, তখন সেখানে আঘাতে চন্দন হয়ে এসেছেন মিসেস অনুরাগ সায়গল। উপন্যাসের নিভৃতে থাকা এই চরিত্রটি অজান্তেই আপননার শ্রদ্ধাস্পদেষু হয়ে উঠবেন। জানকী থেকে সাংবাদিক যমুনা দাস হয়ে ওঠার যাত্রাপথে এই চরিত্রটি নীবরে উপস্থিত থেকেছেন, ঠিক যেমন কিছু আলোর মতো মানুষ আজো নি:শব্দে মানুষের পাশে থাকেন। এমন মানুষদের সাহচর্য পেয়েই যমুনারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এগিয়ে এসে সোনাব্বাদের পাশে শক্ত হয়ে দাঁড়ান। এমনই এক অনুরাগ সায়গল বা যমুনা প্রতিটি মুহূর্তে সোনাব্বাকে আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন গোটা উপন্যাসে।
সাংবাদিক কারিয়াপ্পা নামক চরিত্রটির কথাও এখানে না বললে নয়। আঞ্চলিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে সে ‘প্রজাবাণী’ কাগজে সোনাব্বার অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিবেদনটি কভার করেছিল। যমুনা তার সাহায্যে একে একে পরিচিত হয়েছে সোনাব্বার বন্ধু চিরি, চিরির ভাই চাংক্রি, নাগহল্লির ছেলে রামায়ার সাথে। আর এভাবে সে যেন একটু একটু করে আবিষ্কার করেছে নিজেরই পুরোনো অতীতকে, যার প্রেক্ষাপটটুকুই যা ভিন্ন, বাকী সবকিছু এক। সেই দলিত মানুষ, সেই তাদের প্রতি ঘটে যাওয়া অত্যচার, অন্যায়, অবিচার… সবকিছু, সবকিছু এক….।
লেখিকা আরেকটি বিষয় খুব দক্ষতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন, তা হল দলিত মানুষকে নিয়ে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলির চালবাজি। দলিত মানুষের জীবন-মৃত্যুকে ইস্যু করে নোংরা খেলায় নেমে যায় তারা। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য একগুচ্ছ সুরক্ষা-নির্দেশ নিয়ে আসেন, এমনকি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মাসিক ভাতা পঞ্চাশ টাকা করে বেড়ে যায় অথচ দিনের শেষে তারা সতর্কভাবে এড়িয়ে যায় সোনাব্বার মৃত্যুর কথা! এমনকি সহানুভূতিশীল এনজিওর হর্তাকর্তারাও সোনাব্বার নামটুকুও উচ্চারণ করে না। মুখ্যমন্ত্রী সোনাব্বার মায়ের সঙ্গে ২০ মিনিট ধরে সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলেন। এই সহানুভূতি এতটাই ফলপ্রসূ হয় যে কনকাম্মা সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর কনিষ্ঠা কন্যা ক্যানসারে ভুগে মারা গেছেন আর কিছু স্বার্থান্বেষী লোক তার মেয়ের চরিত্র নিয়ে অযথা কুৎসা রটাচ্ছে। তাই সত্য ঘটনা প্রকাশ করার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছেন। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় দু-একটি কাগজের ভূমিকায় সামান্য অসন্তোষ প্রকাশ করেন, বলেন, ‘চমকদারিত্বের জন্য অর্থসত্য অথবা জনরবে উৎসাহ দেওয়া তাদের কর্তব্য নয়’।
এভাবেই একটি প্রতিবাদী জীবন শেষ হয়, আর পিশাচের মতো অমানুষগুলি শাস্তিহীন হয়ে রয়ে যায় সমাজের দুষ্ট ক্ষতের মতো।
তবু, এভাবেও জীবন এগিয়ে চলে। সোনাব্বার মৃত্যুতে কনকাম্মা দারিদ্রসীমার নিচে থাকা লোকেরদের প্রাপ্য সাহায্যের প্রাপক হন। আর, কারিয়াপ্পার চাকরি চলে যায়। তবে, নোংরা এই রাজনীতির বাইরে একটি বিষয় খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে সোনাব্বার মৃত্যু প্রশাসনকে ভাবতে বাধ্য করেছে। যতই তারা চাপা দিক না কেন, সোনাব্বার জন্যই অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীরা একটু সহজে নি:শ্বাস ফেলার জায়গা পেলেন তাঁদের কর্মক্ষেত্রে। “ এদের আর চট করে ভয় দেখানো যাবে না”।
আর এই সমস্র অশান্তির মধ্যে শান্তির বাতাস কারিয়াপ্পা আর যমুনার মতো সাংবাদিকরা, যারা খবরের সত্যতা সংগ্রহের জন্য পাড়ি দেন কর্ণাটকের এক রুক্ষ গ্রামে, যারা চাকরি চলে যাওয়াকে ভয় পায় না, যারা জানে যতক্ষণ হাতে কলম আছে একটা না একটা কাগজে কাজ তার হবেই।
গোটা উপন্যাস জুড়ে লেখিকা সুনিপুণ ভাবে আমাদের ভারতবর্ষের দলিত সমাজের অবস্থা নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন। দলিত মানুষেরা
আমাদের স্বাধীন দেশে সংবিধান থাকা সত্ত্বেও অধিকার এবং সম্মান থেকে তীব্রভাবে বঞ্চিত। এই উপন্যাস লেখা হয়েছে ২০০৯ সালে, এই ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েও এর থেকে কি মুক্তি ঘটেছে আমাদের? মাত্র কয়েকদিন আগে ২০২১ এর ফেব্রুয়ারী মাসে সোনাব্বার মতো আরেকটি নাম উঠে এসেছে কাগজের পাতায়, তার নাম রুদ্রাম্মা (নাম পরিবর্তিত)। ২২ বছরের এই তরুণীটি দেবদাসী নির্মূলন কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চান, যাতে তাকে দেবদাসী না করা হয়। পুলিশবাহিনী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে মেয়েটি জানায়, সে কোনোক্রমে পালিয়ে বেঁচেছে, কিন্তু মেয়েটির প্রেমিক আর তাঁকে বিয়ে করতে চাইছে না। রুদ্রাম্মা এখন একটি কারখানায় কাজ করছেন। নাচ এবং নাটকে আগ্রহ থাকায় তিঁনি একটি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন, কিন্তু তিঁনি দেবদাসী পরিবার থেকে এসেছেন এই পরিচয় জানামাত্র সবাই তাঁকে উত্যক্ত করতে শুরু করে। সবকিছু হারিয়ে মেয়েটি এখন বড়ো কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। মাত্র তিনবছর আগের ঘটনা এটি। কটি সংবাদই বা এমন কাগজের পাতায় উঠে আসে, বেশিরভাগই তো অন্তরালে থেকে যায়! ২০১৮ সালে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সমীক্ষা করেছিল, সেখানকার তথ্য অনুযায়ী, কর্ণাটকে এখনো নব্বই হাজার দেবদাসী রয়েছেন, এদের মধ্যে কুড়ি শতাংশ দেবদাসী উত্তর কর্ণাটক জেলার দরিদ্রতম গ্রামের অধিবাসী। এদের বেশিরভাগেরই বয়স আঠারো বছরের কম।
এই আমার ভারতবর্ষ! সময় জলের মতো বয়ে যায়, আইন করেও দেশের জঘন্য অবস্থার পরিবর্তন প্রায় হয় না। এই সামাজিক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জয়া মিত্রের এই উপন্যাসটি একটি প্রয়োজনীয় থাপ্পড় এমন বলাই যায়। সুপ্রকাশ-কে সাধুবাদ জানাই এমন একটি প্রতিবাদী উপন্যাস পুনরায় প্রকাশ করার জন্য। এই গ্রন্থ ভারতবর্ষের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের অবশ্য-পাঠ্য একটি গ্রন্থ। প্রতিটি সচেতন ভারতীয় নাগরিকের অন্তরে দৃঢ প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠুক এই বইটি, এই প্রার্থনা।
………………………………..
বইয়ের নাম : স্বর্ণকুমারীর মৃত্যু ও জীবন
লেখক : জয়া মিত্র
প্রচ্ছদ : কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত
মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা
প্রকাশক : সুপ্রকাশ