আব্দুল জব্বারের আপনজন। লিখছেন সুমনা চৌধুরী

0
দ্বাদশ শ্রেণীতে যখন পড়ি, জেলা গ্রন্থাগারের সদস্য সূত্রে একখানা বইয়ের হদিশ পাই। গ্রন্থাগারের তাকে অন্যান্য বইয়ের মাঝখানে। আপনজন, লেখক আব্দুল জব্বার। হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে বইখানা বাড়ি নিয়ে আসি। এই প্রথম আব্দুল জব্বারের লেখার সাথে আমার পরিচয়। তারও বছরতিনেক বাদে বইমেলা থেকে বইখানা কিনেছিলাম নিজের ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্য।
এত বছরে সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনেককিছু অদল-বদল হয়েছে। মূল্যবোধ-মতাদর্শ-সমাজ-সংস্কৃতি-লেখকের দায়—এসব নিয়ে লেখক-প্রকাশকরাই আর ভাবনাচিন্তা করেন না, পাঠকদের দোষ আলাদা করে কী-ই বা দেওয়া যায়। তাই বুঝতে পারি না আব্দুল জব্বারের মতো অসম্ভব শক্তিশালী লেখক, মাটির কাছাকাছি থেকে সমাজ-মানুষকে অত্যন্ত নির্মোহ এবং সৎভাবে বয়ান করে গেছেন যে লেখক, সরাসরি মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন, সারাজীবন দারিদ্র্যের নিষ্পেষণের মাঝেও মতাদর্শহীন হননি, কোনোও আলো ঝলমলে সরকারি মঞ্চে হাত কচলে দাঁড়াননি, আনুগত্য প্রকাশ করেননি যে লেখক, ৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিআইটি রোডের সরকারি আবাসনে মঞ্জুর করা একটি ফ্ল্যাট যিনি এই বলে নাকচ করে দেন–’নিজের বাসস্থানের শিকড় থেকে উপড়ে নিলে তাঁর লেখাই হারিয়ে যেতে পারে’—তাঁকে সাহিত্য পাঠের পরিসর থেকে ব্রাত্য করে তোলার দায় ঠিক কার কাঁধে চাপাবো? পাঠকের উপর? শাসক সহ উগ্রঝান্ডাধারি দলগুলোর আনুগত্য প্রকাশ করা, হাইপ-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক এইসময়ের মতাদর্শহীন লেখক-প্রকাশকদের উপর? নাকি দুদলেরই উপর সমভাবে?—জানি না ঠিক!
বারো বছরে হয়তো বইখানার পুনর্মুদ্রণও আর হয়নি। কিন্তু আমার মনে হয় মাঝে মাঝেই, আমার কাছে যদি সামান্যতম ক্ষমতাও থাকতো, মানুষকে ধরে ধরে এই বই আমি পড়াতাম। শুধু এই বই ই নয়, আব্দুল জব্বারের অন্যান্য অসাধারণ গদ্যের সাথেও এই প্রজন্মের পাঠকদের পরিচয় করাতাম। কিন্তু মুশকিল হলো, বর্তমান তরল বিনোদনের বাজারে আমার সে ক্ষমতা যে আরোই নেই, তা বুঝতে পারি বিলক্ষণ। তবুও সম্পদের সুষম বন্টন হবে না জেনেও তো আশা রাখি একদিন সকলে সমান মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে, তেমনই আশা রাখি একদিন পাঠকেরা আব্দুল জব্বার, মিহির সেনগুপ্তদের পাঠে মনোযোগী হয়ে উঠবেন। সেই আশা (হয়তো বা অলীকই) থেকে আব্দুল জব্বারের ‘আপনজন’ উপন্যাসটি নিয়ে দুকথা বলা প্রয়োজন।
‘আপনজন’ বার-হাল্লান গ্রামের সৈয়দবাড়ির ছেলে ফজল ইলাহির গল্প। ছোটোবেলা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া ফজলের সাথে শুরুতেই লেখক পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন এভাবে—
‘লাল রঙের একটা ব্যাগ হাতে, কালো পীরহান, সাদা পাজামা, মাথায় গোলাকার নকসাদার আরবী টুপি, দাড়িওয়ালা পাতলাটে চেহারার একজন যুবক মৌলবীকে মাঠের পথ থেকে ক্রমেই সৈয়দবাড়ির দিকে এগিয়ে আসতে দেখা গেল। লোকটি যেন ভেসে আসছে। পেছনে তার ধান-ওঠা খোলা মাঠ, মাঠে গরু-রাখাল চরছে—তার ওপারে সবুজ বনানী-শ্রেণী আর সাদা পেঁজা তুলোর মতো মেঘভাসা ঘন নীল আকাশ।’
আবদুল জব্বারের গদ্যের বুননও এখানে উল্লেখ্য। গল্পের একদম শুরু থেকেই নিঁখুত কিছু দৃশ্য নির্মাণ করে চলেন তিনি পাঠকের সামনে। যা গদ্যের সুর লয়ের ব্যাঘাত ঘটায় না, অতিরিক্ত বলেও মনে হয় না। বরং তা পাঠ-কে আরো আকর্ষণীয় ও নিবিড় করে তোলে। এমন এক ছবি যেনবা পাঠক নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছে আলভাঙা পথে এক যুবক মৌলবী বহুদিন পর বাড়ি ফিরছে। গোটা বইটিতেই একদম শেষ অব্দিও তা পরিলক্ষিত হবে। প্রতিটি ঘটনা-পরিঘটনায়।
মুখ্য চরিত্রে ফজল ইলাহি। তার মৌলবাদ থেকে যুক্তিবাদ ও সাম্যবাদের পথে উত্তরণ। আধুনিকতার কাছে, বিজ্ঞানমনস্কতার কাছে আসতে আসতে তার যে যাত্রাপথ—তাতে কত যে ঘটনা-পরিঘটনা-মানসিক টানাপোড়েন। রহিতন, যার সাথে বিয়ে হবে ফজল ইলাহির, রহিতনের ভাই আসফ— যার হাত ধরে যুক্তিবাদ,বিজ্ঞানমনস্কতার দিকে উত্তোরণ ফজল ইলাহির, লবুজান বিবি, আজিম হুসেন, রহিম মিদ্যে, গরিমন বিবি সহ প্রতিটা চরিত্র, এমনকি একদম ছোটো ছোটো চরিত্রগুলোও নিজের নিজের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল। অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণও।
গোটা বই জুড়ে মুখ্য উপজীব্য আসফ-ফজল ইলাহি-রহিতনের কথোপকথন। মৌলবাদ বনাম যুক্তিবাদের দ্বন্দ্ব। আসফ বলছে একজায়গায় ফজল ইলাহিকে—
‘আমি জানিই না ঈশ্বর কাকে বলে। ধর্মপুস্তকে তাঁর কথা যা বলা হয়েছে অথবা তিনি কারো মাধ্যমে নিজেও যা বলেছেন পঞ্চাশটা ভাষাজ্ঞানী পণ্ডিতও তার তলকূল পাবেন না। ভক্ত রামপ্রসাদই ঠিক কথা বলেছেন, ‘মা (কালীমাতা) আমায় ঘুরাবি কত, কলুর চোখ বাঁধা বলদের মতো। ধর্মের ঘানাগাছে চোখ বাঁধা বলদের মতো একই চক্রাকার পথে ঘুরে মরুক কেবল বোকা লোকরা—যারা নতুন পথ সৃষ্টি করবে না, নতুন ভাবনা-চিন্তা থেকে বহু দূরে পড়ে থাকবে। পৃথিবীর বয়স যতদিন হয়েছে যদি আরো ততদিন থাকে কেননা বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সূর্যের বয়স হয়েছে অর্ধেক—তাহলে যারা কোনো একটা বাঁধাধরা প্রাচীন চিন্তাকেই জীবনের একমাত্র আর শেষতম আদর্শ মনে করেন, তাঁরা কিন্তু বিচিত্র সুখের, সমৃদ্ধির আশায় পৃথিবীকে নতুন ধনসম্পদে যারা সাজাতে চায় সেই ভবিষ্যতের মানুষদের কাছে খুনী আসামীর চাইতে বড় অপরাধী।’
আবার আরেক জায়গায় ফজল ইলাহিকে সে বলছে—
“একটা কথা বলি মনে রেখ, সৃষ্টিতত্ত্বের গবেষকরা যতখানি ভাবুক, প্রেমিক, জ্ঞাতা ততখানির সিকিভাগও যদি ধর্মবিশ্বাসীরা হতে পারতেন তবে অজ্ঞানের সংখ্যা এত বাড়ত না। তোমাদের মতো মোহগ্রস্তরা, যারা আল্লাকে ধারণ করে আছে, তারাই সব চেয়ে বিপজ্জনক। কেন না, আল্লা সর্বশক্তিমান, সর্বজয়ী, তোমাদের কৃপায় তার কিছু এসে যায় না। এসবও সূক্ষ্ম বিশ্বাসীদেরই কথা। সবচেয়ে দুঃখ, রসুল যেভাবে আল্লার ভাবনা ভেবেছিলেন তা যদিও মৌলিক বা স্বতন্ত্র কিছু নয়—হজরত ইব্রাহিম (আঃ) এর পুনঃপ্রচারক ছিলেন তিনি—তবু তা অনুসরণ করার মতো ক্ষমতা মুসলমানরা হারিয়ে ফেলেছে। যে সমাজে রুমী, গাজ্জালী, হাফিজ, খৈয়াম এসেছিলেন সে সমাজে আজ প্রতিভার এমন অভাব হবে কেন? প্রতিভা জন্মালে তাকে লালন-পালন করে না কেন? কেন তাকে মূর্খের মতো হত্যা করে ফেলে? আরবে একজন কবির জন্ম হলে উট কোরবানি দেওয়া হত আর বাঙালি মুসলমান ঘরে একজন কবি সাহিত্যিক জন্মালে তার সম্বন্ধে অনাস্থা পোষণ করা হয়। বলা হয়, তুমি আবার কী লিখবে—সবই তো কোরআন হাদিসে লেখা হয়ে গেছে। ভয় আছে, যদি নতুন ভাবনা আনে, যদি বেশরিয়তী কিছু বলে। বদ্ধচিন্তা, সে যতই উৎকৃষ্ট হোক, এক সময় শ্যাওলা জলা ডোবায় পরিণত হয়। সুপণ্ডিতেই তর্ক করতে পারেন, মূর্খরা বিতর্ক বাধিয়ে রক্তপাত ঘটিয়ে বসে। এসো ভাই ফজল, সবজান্তা হতে চেয়ো না, আমরা জ্ঞান-সমুদ্রের কুলে দাঁড়িয়ে কেবল ঢেউ গুনছি, পাড়ি জমানোর ব্যাপার তো সুদূর পরাহত। কেউ যদি বলে অমুক পীর রূপোর খড়ম পায়ে দিয়ে সমুদ্র পার হয়ে যান তবে এসব অলৌকিক গল্প শোনার সময় আমাদের নেই। আমরা মূর্খ নই। যেই বলুক কথাটা আমরা মোহমুক্ত হয়ে বাজিয়ে দেখতে চাই। মেকি হলে ফেলে দোব। ফজল-ভাই, জগতের অনেক ধর্মের অনেক বাণীই রাংতায় মোড়া, আসলে তারা রুপো নয়। তবে বাজিয়ে দেখার বিদ্যাবুদ্ধি অর্জন করা চাই।’
রহিতন, গল্পের মুখ্য নারীচরিত্র হিসেবে যাকে ধরা যায়, এক পর্বে সে ফজল ইলাহিকে বলছে—
“বর্তমান সংগ্রামী বাস্তব জীবন—কিন্তু সামনের বৈজ্ঞানিক কল্যাণকর্মের দিকে তাকিয়ে আছে। শুধু মুসলমানদের জন্য নয়–পৃথিবীর সমস্ত মানুষ আর জীবজগতের জন্য। প্রাচীন পাহাড় গুহায় অনেক মূর্তি ছবি লেখা থাকতে পারে কিন্তু আজকের যুগে প্রয়োজন যান্ত্রিক সভ্যতার, বৈজ্ঞানিক উন্নতির। ট্রেন না হলে তুমি দেওবন্দ থেকে কতদিন ধরে হেঁটে হেঁটে আসতে?’
অথবা ফজলের সাথে তর্ক জুড়ে এই বলে—
‘হজরত যে পুরোনো পুকুরের সাফাই কর্ম করলেন সেই পুকুরে তো আবার অনেক পানা-শ্যাওলা ভটকা জমে গেল। অনেক পীর-আউলিয়া দেশটাকে বখরা করে নিয়েছেন। তাঁরাই এখন আল্লাহ্র প্রধান চেলা। অলৌকিক কাণ্ড-কারখানার মালিক বলে স্তাবকদের দিয়ে পবিত্র মাজার খুলে বসে ধর্মের ব্যবসা জুড়েছেন। কমিউনিস্টরা মানবতার ধর্ম মানে। সমাজজীবনকে সুস্থ সবল করে তুলতে চায়।’
—এভাবেই নানা যুক্তি-দ্বন্দ্বে গল্প এগিয়েছে। আব্দুল জব্বারের গদ্যের ধারাটি এমন, তাতে চমকপ্রদ কোনো লাইন বা ক্যাচি লাইন আলাদা করে কোট করার থাকে না। বরং গোটা গল্প এমন ধারায় বয়ে চলে, প্রতিটি ঘটনা-পরিঘটনাই একে অন্যের সাথে এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে, আলাদা করে একক কোনো লাইন বা পরিচ্ছেদ উদ্ধৃত যায় না।
গল্পের শেষদিকে এসে ফজল ইলাহির মুখে উচ্চারিত হয়, যখন দেওবন্দে রহিতন আসিফের চিঠি পেয়ে তাকে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে—
‘চলে যাব এখান থেকে। মাদ্রাসায় কেবল মৌলবীতে মৌলবীতে কে কত শরিয়তী ব্যাখ্যা বোঝেন বা জানে তাই নিয়ে মনান্তর। কে কত বড় আল্লাভক্ত তারই প্রতিযোগিতা। খুব ঈর্ষাপরায়ণ। আর পরস্পরের নিন্দা করে অসাক্ষাতে। বদনাম গায়। বাইরে ধর্মের ভেক। যার লম্বা পীরহানের কোণা ধরে যত ভক্ত ‘মোসায়েবী’ (তোষামোদ) করে ততই তার প্রতিপত্তি। পরকালের দোহাই দিলেও একালটা যাতে সুখে–সম্পদে কাটে তার জন্যে নানা রকম ধান্দাবাজি।’
“তাহলে তোমার এখানে কোনোরকম মায়া নেই?’
‘বরং মুরগিছানাকে জিজ্ঞেস করো যে ডিমের খোসার মধ্যে থেকে সে বেরিয়ে এসেছে তার প্রতি কতটুকু মায়া আছে?’
গল্পের শেষ হচ্ছে ফজল ইলাহির উপপ্রধান পদে নির্বাচিত হয়ে গ্রামে ফিরে আসার মধ্যে দিয়ে। সে দৃশ্যর শুরুর খানিকটা বইয়ের অংশ থেকেই তুলে ধরা যাক—
“মিছিল আবার ধীর ধীরে চলে গেল।
ফজলের সামনে একটি লাল রঙের কাস্তে হাতুড়ি—তারা মার্কা পতাকা—বাতাসে আন্দোলিত হতে লাগল।
আসফের হাতে হাত দিয়ে ফজল বলল, ‘তুমি মানুষকে নিখাদ করে গড়ে নিতে জান। এতদিন পরে আমি তোমাদের মধ্যে একজন হয়ে মিশে যেতে পারলাম।’….”
গোটা বইটিতে আব্দুল জব্বার এমন এক সময়কে বয়ান করছেন, যখন গ্রাম ধীরে ধীরে তার খোলসকে পালটে ফেলছে, আধুনিক হওয়ার পথে এগোতে চাইছে, শহুরে সভ্যতার ছোঁয়া লাগছে তার জীবনযাপনে—কিন্তু প্রাচীন চিন্তা, ধর্মীয় গোড়ামি তার পথ আটকে ধরছে। একদিকে মৌলবাদ, অন্যদিকে আধুনিকতা—যা টান-মানজা্র লড়াইয়ে মৌলবাদের ঘুড়িটাকে প্রাণপনে আটকাতে চাইছে।
গোটা বই জুড়ে আর যে দ্বন্দ্বটি দেখা যায়, তা লেখক বইটির মুখবন্ধেই খানিক আভাস দিয়েছেন এভাবে—
“ইসলাম আর কমিউনিজম—দুটোই ফর্ম—যেন ঢালাই করা ছাঁচ—দুটোতেই গরিব মেহনতি মানুষের স্বার্থ বড় করে দেখা হয়েছে। ইসলামে সাম্যের কথা বলা হলেও বাদশা আর ফকির পাশাপাশি দাঁড়ায় মসজিদে শুধু অল্পক্ষণের জন্য কিন্তু অর্থনৈতিক সমাধান হয় না। কমিউনিজম অর্থনৈতিক সমাধান চায়। গরিব অভাজন অবাঞ্ছিত মানুষ সবাই আপনজন হতে তার দিকে ছুটেছে। মৌলবাদীরা তাই ঘর সামলাতে ব্যস্ত।”
গোটা বইটির আরো কিছু উল্লেখযোগ্য দিক রয়েছে। প্রথমত গ্রামীণ জীবনের চিত্র। মুসলমান গ্রামীণ জীবনটি, বিশেষত প্রিভিলেজ শ্রেণীর নন-প্রিভিলেজ শ্রেণীটির সাথে যে দ্বন্দ্ব, মুসলমান সমাজটির প্রতিটি ধারা-উপধারার যে নির্মোহ বয়ান, পক্ষপাতহীন সৎ উচ্চারণ—তা বাংলা সাহিত্যে দুর্লভ।
দ্বিতীয়ত, ভাষা। বাংলা সাহিত্যে মুসলমান সমাজ তথা সামাজিক জীবন-যাপন নিয়ে বই আছে, তার মাঝে অনেক ভালো বইও আছে নিঃসন্দেহে, কিন্তু তাতে প্রয়োগের এতোই ভুল থাকে যে, পড়তে গিয়ে রীতিমতো হোচট খেতে হয়! অথবা বাস্তবের যে শব্দ-দৃশ্য-চিত্র মুসলমান সমাজের দৈনন্দিন যাপনে ব্যবহৃত হয়, তার সাথে বহুক্ষেত্রেই কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এখানেই আব্দুল জব্বার অনন্য। এই দৃশ্য-শব্দ-চিত্র বয়ানে।
বাংলা সাহিত্যের কিছু পাঠককে দেখেছি আব্দুল জব্বার বলতে শুধু ‘ইলিশমারির চর’ এবং ‘বাংলার চালচিত্র’ বোঝেন বা বলেন। ইলিশমারির চর খুবই ভালো উপন্যাস নিঃসন্দেহে। কিন্তু ‘আপনজন’ও একই উচ্চতার লেখা। এবং বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের একটি অবশ্যপাঠ্য বইও।
………………………………….
বইয়ের নাম : আপনজন
লেখক : আব্দুল জব্বার
প্রচ্ছদ : অনুল্লেখিত
মুদ্রিত মূল্য : ৪০ টাকা
প্রকাশক : গ্রন্থতীর্থ
প্রকাশকাল সেপ্টেম্বর, ১৯৯৫

Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *